মেহেরপুর অফিস: দেশের পানির স্তর প্রতিনিয়তই নিচে নেমে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ডেল্টা প্লানের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় একযোগে ৫১৭টি নদী ও খাল খনন করা হচ্ছে। এর ফলে পানির স্তর আবারও উপরে উঠে আসছে। এতে আর্সেনিক থেকে শুরু করে নানা সমস্যার সমাধান মিলবে বলে দাবি করেছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার যতারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ভৈরব নদী পুনঃখননের উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদী ও খাল খননের প্রথম পর্যায়ের কাজ আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই শেষ হবে। ২য় ফেজে দেশের আরো তিন হাজার ছোট খাল ও নদী খননের কাজ শুরু হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলেই নদীগুলোর আবার নাব্যতা ফিরে পাবে। পাশপাশি আর্সেনিক সমস্যা থেকে শুরু করে ৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে পরিণত হবে। প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, খননের পর যদি কেউ যদি নদীর পাড় দখল করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারণ প্রধানমন্ত্রী নিজেই এ কাজের তদারকি করছেন। প্রকল্প দু’টি বাস্তবায়ন হলে একদিকে কৃষকরা যেমন সেচ সুবিধা পাবে; অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য অনেকটাই ফিরে পাবে। বাংলাদেশের নদ-নদী, খাল-বিলের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সীমানা নির্ধারনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি। যেসব নদ-নদী, খাল-বিল পুনঃখনন করা হচ্ছে সেগুলোর সীমানা নির্ধারণ করে গাছপালা লাগানো হচ্ছে। নদী যাতে পুনরায় দখল না হয় সেদিকে জেলা প্রশাসকদের কঠোর হবার আহŸান জানান তিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ ফরহাদ হোসেন এমপি। মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মুনসুর আলম খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ফজলুল রশিদ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (পশ্চিমাঞ্চল) আব্দুল হেকিম, কুষ্টিয়া পওর সার্কেল তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ, মেহেরপুর জেলা পুলিশ সুপার রাফিউল আলম, জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক, মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজন সরকার, মুজিবনগর থানা ইনচার্জ মেহেদী রাসেল প্রমুখ। এর আগে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে সকাল সাড়ে ১০টায় মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্সের হেলিপ্যাড এ অবতরণ করেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
উল্লেখ্য, ২৩৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে চলমান ২য় পর্যায়ে ভৈরব নদের খনন কাজে মেহেরপুর জেলায় ৩০ কিলোমিটার ও চুয়াডাঙ্গার অংশে ২৫ কিলোমিটার খনন কাজের উদ্বোধন করা হয়। আগামী বছরের শেষের দিকে এ খনন কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।