অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু : প্রেস সচিব

স্টাফ রিপোর্টার: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আজকের সভার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ইনিংস শেষ, দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হয়েছে। শনিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমির সামনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, আজকের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম সভা বা প্রস্তুতি সভা। আজকের এ প্রোগ্রামে ২৬ দল ও জোটের প্রায় একশো জনের মতো রাজনীতিবিদ উপস্থিত আছেন। এরমধ্যে ১০জন রাজনীতিবিদ কথা বলেছেন। বিএনপি থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। প্রধান উপদেষ্টা তার কথায় বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আজকে প্রথম ইনিংস বা অধ্যায় শেষ হয়েছে। আজকের ডায়ালগের মাধ্যমে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়েছে। তিনি ২৪ মিনিট বক্তব্য দিয়েছেন। যা ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রতি দেশ ও আন্তর্জাতিক সব বড় দেশের সমর্থন আছে। তারা বলেছেন তোমাদের কী চাই আমরা তোমাদের সঙ্গে আছি। ইউনাইটেড নেশনের প্রতিবেদন এলো এর মাধ্যমে বিশ্ব জানতে পেরেছে কত ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চলেছে, কে অর্ডার দিয়েছিল এবং কীভাবে দেশের মানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছিল। এর আগে জাতীয় নির্বাচন কবে হবে, তা জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করছে বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করবে আমাদের নির্বাচনটা কবে হবে।’ শনিবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমির সামনে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ শুরুর আগে তিনি একথা বলেন। শফিকুল আলম বলেন, ‘এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমরা হয়তো কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারব। আর পরে যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে, তারা বাকিগুলো বাস্তবায়ন করবে।’ শফিকুল আলম জুলাই চার্টারের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ছয় সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে। রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছুবে, আমাদের আশা থাকবে, সব রাজনৈতিক দল এটাতে স্বাক্ষর করবে। সেটা হবে জুলাই চার্টার।’ সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করেন প্রেস সচিব। তিনি বলেন, ‘আর যেসব ক্ষেত্রে প্রধান ঐকমত্য প্রয়োজন, সেটার জন্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে।’ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী বাংলাদেশকে পুনর্গঠন এবং তারপরে আমরা যে রাজনৈতিক সমাধানে যাচ্ছি, কীভাবে আমাদের ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনটা হবে, তার জন্য আজকে রাজনৈতিক সংলাপের সূচনা।’ গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজকে এই কমিশনের সহসভাপতি করা হয়েছে। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফররাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান। বৈঠকে কমিশন আগামী নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশগুলো বিবেচনা করবে। এছাড়া কমিশন জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল ও শক্তিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে।