স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় দলের সাবেক তারকা ফুটবলার নুরুল হক মানিক (৫৫) আর নেই। রোববার দুপুরে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে হাসপাতালে নেয়ার পথেই তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে…রাজেউন)। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের হয়ে শুরু করলেও জাতীয় সবুজ দলে খেলেছেন প্রায় পাঁচ বছর। এছাড়া মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদেও খেলেছেন দীর্ঘদিন। মানিক বেশ কিছুদিন যাবৎ জ্বর, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। মৃত্যুর দিনই তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দেয়ার কথা ছিলো। সাবেক ফুটবলারদের সংগঠন সোনালী অতীত ক্লাবের সভাপতি হাসানুজ্জামান খান বাবলু বলেন, দু’দিন যাবৎ তার জ্বর, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট হচ্ছিলো। করোনা টেস্ট নিজেই করিয়েছিলো। সতীর্থ ফুটবলার ইকবালকে জানিয়েছিলো, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা। শরীর ক্রমান্বয়ে খারাপ হচ্ছিলো। অথচ হাসপাতালে আর যেতে পারলো না মানিক। তার আগেই চলে গেলো ইহলোক ছেড়ে।
প্রিয় শিষ্যকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন বাবলু, আমার প্রিয় ছাত্রদের মধ্যে একজন ছিলো নুরুল হক মানিক। ১৯৮৫ সালে জাতীয় সবুজ দলের ফুটবলার ছিলো। পাকিস্তানে সাফ ফুটবলে খেলতে গিয়ে একটি গোলও করেছিলো। জাতীয় দলে পাঁচ বছর খেলার পর ১৯৯৬ সালে আমি কোচ থাকাকালে মানিককে নিয়ে আসি ব্রাদার্সে। দুই বছর পর সে চলে যায় মোহামেডানে। পরে আরও অনেক ক্লাবেই খেলেছে সে। মিডফিল্ডে দ্রুতগতির খেলোয়াড় ছিলো মানিক। চলেও গেলো দ্রুতই। তিনি আরও বলেন, আমাদের সোনালী অতীত ক্লাবের সদস্য ছিলো মানিক। আগামীতে তাকে ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবেও নির্বাচন করাতে চেয়েছিলাম। খুব মনে পড়ছে মানিককে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাফুফের বয়সভিত্তিক কোচ হিসেবে কাজ করে গেছে মানিক। খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর কোচিং পেশায় জড়িয়ে যান মানিক। একযুগেরও বেশি সময় এএফসির অর্থায়নে বাফুফের কোচ হিসেবে কাজ করছিলেন। কমলাপুর স্টেডিয়ামে ক্ষুদে ফুটবলারদের প্রশিক্ষণ দিতেন। সাম্প্রতিক সময়ে সাড়া জাগানো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় টুর্নামেন্ট ফারাজ স্মৃতি গোল্ডকাপের অন্যতম আয়োজক ছিলেন তিনি।
সাবেক জাতীয় ফুটবলার সাইফুল বারী টিটু বলেন, ‘অনেক ভালোমানের ফুটবলার ছিলেন মানিক। নব্বইয়ের দশকে মোহামেডানে অধিনায়কত্ব করেছেন। এতেই বোঝা যায় ফুটবলার হিসেবে কতটা উঁচু মানের ছিলেন তিনি। মানুষ হিসেবেও তিনি অসাধারণ ছিলেন। বাংলাদেশের ফুটবলকে আরও অনেক কিছু দেয়ার ছিলো তার। মানিকের মৃত্যুতে ফুটবলাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে), সোনালী অতীত ক্লাব, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, আরামবাগ ক্লাব, সম্মিলিত ক্রীড়া পরিবার ও বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনসহ (বিএসজেএ) বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠন ও সংস্থা শোক জানিয়েছে।