মাথাভাঙ্গা মনিটর: নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে জয় দিয়ে দুর্দান্তভাবেই বিশ্বকাপ শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পরের ম্যাচেই দেখতে হয়েছে মুদ্রার উল্টোপিঠও। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হারের লজ্জায় ডুবেছে সাকিব আল হাসানের দল। লজ্জাজনক সেই হারের দুঃস্মৃতি ভুলে নতুনভাবে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার নিয়ে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে এই ম্যাচে জয় পেতে মরিয়া বাংলাদেশ। পেসারদের জন্য স্বর্গখ্যাত ব্রিসবেনের দ্য গ্যাবায় আজ বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের কাছে ৯ রানে জয়ী হওয়া বাংলাদেশ পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা কাছে ১০৪ রানে রেকর্ড ব্যবধানে হারের লজ্জা পায়। আজ রোববার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারলে সেমিফাইনালে খেলার আশা অনেকটাই দুঃসাধ্য হয়ে যাবে টাইগারদের জন্য। বড় হারের ধাক্কা নিয়ে বাংলাদেশ তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। উল্টোদিকে জিম্বাবুয়ে মাঠে নামবে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক জয়ের আত্মবিশ্বাস সঙ্গে নিয়ে। ক্রিকেটের কোন ফরম্যাটে বাংলাদেশের সঙ্গে জিম্বাবুয়ের তুলনা হয় না বলেই কয়েক মাস আগেও ধারণা করা হচ্ছিলো। কিন্তু ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে হঠাৎ করেই পূর্ব আফ্রিকান দেশটি জায়ান্ট কিলার হিসেবে আবির্ভূত হওয়ায় পরিস্থিতির পাল্টে গেছে। বছরের পর বছর সংগ্রাম-বিভিন্ন সমস্যা এবং দুর্বল ক্রিকেট সংস্কৃতির পরও পরিকল্পনার সঙ্গে ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক শ্রম দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। পরিশ্রমের ফল পাচ্ছে তারা। মাত্র তিন মাস আগে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশকে হারানোর পর থেকে তাদের ক্রিকেট যেন নতুন উদ্যেমে যাত্রা শুরু হয়েছে। এরপরও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে খেলতে হয়েছে জিম্বাবুয়েকে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা দলটি মূল পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে অল্পের জন্য হারের লজ্জা থেকে রক্ষা পায় জিম্বাবুয়ে। বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। তবে পরের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে দলটির পারফরম্যান্স বাংলাদেশের জন্য সতর্কবার্তাই দিয়ে রেখেছে। তবে জিম্বাবুয়ের দুর্দান্ত জয় ও আগের ম্যাচে বাংলাদেশের হারে চিন্তিত নন দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম। তিনি জানান, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পরও মানসিকভাবে শক্ত আছে বাংলাদেশ দল। জিম্বাবুয়ে ম্যাচের আগেরদিন শ্রীরাম বলেন, ‘আমি মনে করি দলের মনোবল ভালো অবস্থায় আছে। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, ওইদিন দক্ষিণ আফ্রিকা সত্যিই ভালো খেলেছে। তারা খুব শক্তিশালী ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘তিন নম্বরে নেমে (দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে) দলকে এমন শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছেন রাইলি রুশো। কুইন্টন ডি কক এবং রুশোর কাছ থেকে দারুণ ইনিংস দেখেছি আমরা। এখান থেকে আমাদের এখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে।’ বাংলাদেশ ভালো অবস্থায় আছে এবং আজ জিম্বাবুয়ের সাথে মুখোমুখি লড়তে প্রস্তুত জানিয়ে টাইগারদের এই টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট বলেন, ‘২০০৭ সালের পর ১৫ বছর অপেক্ষা করে সুপার টুয়েলভে আমরা প্রথম ম্যাচ জিতেছি-আমি মনে করি এটি চমৎকার কিছু । আমরা মনে করি দলের ছেলেরাই এটা এনে দিয়েছে। দলের জন্য ছেলেদের প্রচেষ্টা এবং পুরো কৃতিত্ব তাদেরই ছিলো।’ শ্রীরাম আরো বলেন, ‘আমরা এক সাথে অনেক নয় একটি ম্যাচ নিয়েই ভাবতে চাই। বেশি ভাবতে চাই না। আমাদের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ জিম্বাবুয়ে। আমাদের অবশ্যই একটি পরিকল্পনা আছে। আমরা জিম্বাবুয়েকে সম্মান করছি। পাকিস্তানের বিপক্ষে অসাধারণ পারফরম্যান্স ছিলো তাদের। আমরা ঐ ম্যাচর প্রতিটি বল দেখেছি এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে তারা যেভাবে খেলেছে সেটি ছিলো অবিশ্বাস্য।’ এই ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত ১৯ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে। জয়ের পাল্লা ভারী টাইগারদের। বাংলাদেশের ১২ জয়ের বিপরীতে জিম্বাবুয়ের জয় ৭টিতে।