জীবননগরে প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর শহরের তানজিনা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারিয়ান অপারেশনের পর এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার রাতে অপারেশন থিয়েটারে আন্নি খাতুন (২০) নামের ওই প্রসূতির সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু ঘটে বলে অভিযোগ। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অপারেশনের ৩ ঘণ্টা পর তার তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করে। যশোরে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত আন্নি খাতুন দত্তনগর মথুরানগরের শাহিন আলমের স্ত্রী।
আন্নি খাতুনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাত ৯টার দিকে আন্নির প্রসব বেদনা উঠলে তাকে তানজিনা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সিজারের প্রয়োজনীয়তার কথা জানালে পরিবারের সদস্যরা সম্মতি দেন। অস্ত্রোপচারের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয় বলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ দাবি তুলেছে। তবে স্থানীয়দের অনেকে দাবি করেন, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি করে মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে ক্লিনিক থেকে বের করে দেয়। পাশাপাশি পরিবারের সঙ্গে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে আপস করা হয়েছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে। এদিকে, নিহতের জানাজার নামাজ গতকাল যোহরের পর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও রহস্যজনকভাবে তা বেলা ১১টার মধ্যেই সম্পন্ন করা হয়।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, অস্ত্রোপচারটি করেন সার্জন ডা. সোহেল রানা। অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ডা. আনিসুর রহমান। ক্লিনিকের মালিক সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রোগীর অবস্থা গুরুতর ছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অনুমতি নিয়েই অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের সময় রোগীর শরীরে চার ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। এটি ছিল তার তৃতীয় সিজার। অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হলেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। রাত ৪টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়, কিন্তু পথেই তিনি মারা যান।
সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনাটির বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন হোসেন বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।