আলমডাঙ্গা ব্যুরো: গত ঈদের পর থেকে সরকারি কিংবা বেসরকারি সব ধরণের মানবিক সহায়তা বন্ধ। ফলে আলমডাঙ্গা অঞ্চলের নিম্নআয়ের মানুষ বড় কষ্টে রয়েছেন। বিশেষ করে নি¤œমধ্যবিত্ত ও নিম্নবৃত্তরা। গত মার্চ মাসের শেষের দিক থেকে ঈদুল ফিতর পর্যন্ত আলমডাঙ্গায় সরকারি ও বেসরকারিভাবে খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণকালে কর্মহীন নিম্নআয়ের মানুষকে এ খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এমনকি নিম্নমধ্যবিত্তদেরও খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
সরকারিভাবে ত্রাণমন্ত্রণালয়ের ত্রাণসহায়তা, টিআর, কাবিখা প্রকল্পের সহায়তা, ভিজিএফ, ১০ টাকা মূল্যের চাল, নগদ টাকা ও ন্যায্য মূল্যের টিসিবির পণ্য সহায়তাসহ নানা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচীর সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। একই সাথে বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি যথেষ্ঠ খাদ্যসহায়তা প্রদান করেছে। লকডাউনকালে উপজেলার কয়েক হাজার নিম্ন আয়ের মানুষের পরিবারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলীর নেতৃত্বে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ব্যক্তিগতভাবেও এলাকার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেন। তাছাড়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারও ব্যক্তিগতভাবে খাদ্যসহায়তা প্রদান করেন। কিন্তু ঈদুল ফিতরের পর থেকে সরকারি-বেসরকারিভাবে আর কোনো খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হয়নি। ফলে খুব কষ্টে রয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
পাখিভ্যানচালক ইমরান আলী জানান, করোনা আতঙ্কে খুব অল্প সংখ্যক মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন। প্রতিদিন যা উপার্জন হয় তা দিয়ে সংসার চালাবো না ঋণের কিস্তি পরিশোধ করবো? গরীব মানুষের মরেও শান্তি নেই।
হোটেল কর্মচারী ফিরোজ হোসেন জানান, দীর্ঘ ২ মাস বন্ধের পর গত ১০-১২ দিন আগে তাদের হোটেলে কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু বেচাবিক্রি নেই। মানুষ হোটেলে খেতে ভয় পাচ্ছেন করোনা সংক্রমনের ভয়ে। ফলে সপ্তাহে ৩-৪ দিন বেকার থাকতে হচ্ছে।
বেসরকারি জীবনবীমা কোম্পানিতে চাকরি করেন রহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, ফিল্ড পর্যায়ে যারা চাকরি করেন, টার্গেট পূর্ণাঙ্গ না হলে তাদের বেতন পরিশোধ করে না কোম্পানি। গত ৩ মাস ঘরে বসে। তিনি বেতন পাননি। এখন করোনা সংক্রমণের ভেতর সাহস করে ফিল্ডে গেলেও পলিসি গ্রহণকারীদের কিস্তি প্রদানের আর্থিক সক্ষমতা নেই। সে কারণে বেতন পাওয়া দুরাশা। সংসার খরচের টাকা জোগাড় করতে দিশেহারা অবস্থা।
আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী জানান, সহায়তা আপাতত বন্ধ আছে। খুব শিগগিরই আবার নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্যসহায়তা প্রদান শুরু করা হবে।