স্টাফ রিপোর্টার: আজ থেকে সারাদেশের মসজিদগুলো সাধারণ মুসল্লিদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার জোহর থেকে নিরাপদ দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করে দেশের সকল মসজিদে পাঁচওয়াক্ত নামাজ ও তারাবি জামায়াতে পড়া যাবে। গতকাল বুধবার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় ধর্ম মন্ত্রণালয়। পরে সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি রমজান মাসে দেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি মসজিদে জামাতে নামাজ পড়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। দেশের শীর্ষ আলেম-উলামারা মুসল্লিদের মসজিদে নামাজ পড়ার সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানান। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে নিজেদের বাঁচাতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দেশনা মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেন। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ধর্ম মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।’ তিনি বলেন, আগামীকাল জোহরের নামাজের পর থেকে সারাদেশের মসজিদে মুসল্লিরা নামাজ পড়ার সুযোগ পাবেন। তবে মসজিদে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতর নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু শর্তাবলী থাকবে। এসব শর্তাবলীর কথা সারাদেশের মসজিদ পরিচালনা কমিটিকে জানিয়ে দেয়া হবে।’ যেসব শর্তে মসজিদে নামাজ পড়া যাবে: এদিকে বিজ্ঞপ্তি অনুসারে যেসব শর্ত মেনে মসজিদে নামাজ পড়তে হবে- ১. মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। ৫ ওয়াক্ত নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন। ২. মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবান-পানিসহ হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং আগত মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে। ৩. প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে অজু করে সুন্নত নামাজ আদায় করে মসজিদে আসতে হবে। অজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। ৪. কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব অর্থাৎ ৩ ফুট পরপর দাঁড়াতে হবে। ৫. এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে। ৬. শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যে কোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামাতে অংশ নিতে পারবেন না। ৭. সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদের অজুখানায় সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না। ৮. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। ৯. মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজন করা যাবে না। ১০. উল্লিখিত শর্ত পালন সাপেক্ষে প্রত্যেক মসজিদে সর্বোচ্চ পাঁচজন নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ইতেকাফের জন্য অবস্থান করতে পারবেন। ১১. করোনাভাইরাস মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নামাজ শেষে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করার জন্য খতিব ও ইমামদের অনুরোধ করা যাচ্ছে। ১২. খতিব ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উল্লিখিত নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।