হাতছাড়া হতে চলেছে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি

আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে হাত ছাড়া হতে চলেছে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি। আদালতে বিচারাধীন মামলার বিষয়ে খোঁজ খবর না নেওয়া ও আদালতে মামলার  মোকাবেলায় অনীহার কারণে মামলার বাদী পক্ষে একতরফা রায় হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ ঘটনায় সচেতন মহলে  তোড়পাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পিছনের ৭২নং গোবিন্দপুর মৌজায় আরএস ১৬নং খতিয়ানে ৮৭৩৫ দাগে ৩৮ শতক জমি রয়েছে। এই জমি ১৯৬১ স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নিজেদের ভোগ দখলে রয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের। নিয়মিত খাজনা দিয়ে আসছেন। এরই মধ্যে ওই সম্পত্তির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে একটি ভূমিদস্যু চক্রের। তারা কয়েক কোটি টাকার স্কুলের এই সম্পত্তি নিজেদের দখলে নিতে শুরু করে নানা চক্রান্তে। এই সম্পত্তি নিজেদের দাবি করে রুইতন সেখ ও খেপাই সেখের পক্ষে তার ওয়ারেশগণ আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা বিচারাধীন থাকাবস্থায় স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথম দিকে আদালতে হাজিরা দিলেও পরে আর মামলার বিষয়ে খোঁজ খবর রাখেনি। সীমাহিন অবহেলায় কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাত হতে চলেছে। এ অবস্থায় ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে একতরফা শুনানির খবরে স্কুল কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। স্কুলের মূল্যবান এ সম্পত্তি রক্ষায় দৌঁড়ে ঝাপ শুরু করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। মামলায় পূর্বের নিয়োগকৃত উকিল রবগুল হেসোনকে বাদ দিয়ে নতুন উকিল নিয়োগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মামলা করার পর আমরা নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিয়েছি। কিন্তু সমন না পাওয়ায় আমরা ২৬ তারিখে আদালতে হাজির হতে পারিনি। এটা আমাদের পূর্বের নিয়োগকৃত উকিলের অসুস্থতার কারণেও হতে পারে। আমরা বিষয়টি জানার সাথে সাথে ত্বরিত ব্যবস্থা নিয়েছি। বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হাসিনুর রহমান মঙ্গলবার দ্রুত আদালতে হাজির হয়ে নতুন আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন। সম্পত্তি রক্ষায় যা যা করণীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ তা করবে। এদিকে, সচেতনমহল বিদ্যলয়ের এ মূল্যবান সম্পত্তি রক্ষায় সোচ্চার হয়েছেন। কোন ভাবেই স্কুলের এই সম্পত্তি যাতে হাতছাড়া না হয় সে বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক তাপস রশিদ বলেন, আলমডাঙ্গার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ের কোন ক্ষতিসাধণ আলমডাঙ্গাবাসী স্বাভাবিকভাবে মেনে নেবেন না। স্কুল কর্তৃপক্ষের ভুলে বা যেভাবেই হোক এ মামলা এখন স্কুলের প্রতিকূলে। বিবাদমান জমি কোন ব্যক্তিগত সম্পত্তি না, এটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ম্যানেজিং কমিটির যা যা করার তা করতে হবে আলমডাঙ্গাবাসীর উচিত এ ব্যাপারে সদর্থক ভূমিকা পালনের। এ মামলার নতুন আইনজীবী অ্যাড. মানিক আকবর জানান, এ মামলার ডকুমেন্টস তুলেছি। স্টাডি চলছে। গতকাল বুধবার মামলাটি পুণরায় শুনানির জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।

Comments (0)
Add Comment