স্টাফ রিপোর্টার: গত ২৩ নভেম্বর স্বামী জাহিদ হোসেনের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে মেহেরপুর থেকে খালার বাড়ি চুয়াডাঙ্গায় চলে আসেন জোসনা খাতুন। হঠাৎ গতকাল মঙ্গলবার সকালে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে সন্দেহ হলে পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘরের দরজা ভেঙে জোসনা খাতুনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। জোসনা খাতুন মেহেরপুর শহরের কাশবপাড়ার জাহিদ হোসেনের স্ত্রী। নিহতের পরিবারের দাবি, জোসনা খাতুন মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সেই কারণেই গলাই ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই গতকাল বিকেলে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ।
জানা গেছে, জোসনা খাতুনের খালু নুরুল হক চুয়াডাঙ্গা শহরের পুরাতন হাসপাতালপাড়ার শিক্ষক মুকাদ্দেছের বাড়ির ৬ষ্ঠতলায় ভাড়া থাকেন। গত ২৩ নভেম্বর স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হলে জোসনার খালা তার বাড়িতে চলে আসতে বলেন।
জোসনার খালু নুরুল হক দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, গত ২৩ তারিখে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হলে আমার বাড়িতে চলে আসে জোসনা। এখানে আসার পর জোসনার হাতে একটি বড় ক্ষত দেখতে পাই। সেখানে ১৮টি সেলাই দেয়া ছিলো। মনোমালিন্যের পর নিজে নিজেই হাত কেটেছিলো বলে জানিয়েছিলো জোসনা। এখানে আসার পর ভালোভাবেই থাকছিলেন। কোনো ঝামেলা ছিলো না। সবার সঙ্গেই কথাবার্তাও বলছিলো। রাতে একসাথে খাবার খেয়ে যার যার মত ঘুমাতে যায়। সকালে ডাকতে গেলে দরজা না খোলায় সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে জোসনা খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি আরও বলেন, জোসনা মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলো। অতিরিক্ত জেদি ছিলো। তার মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী। স্বামী জাহিদুলের সঙ্গে মনোমালিন্যের জের ধরেই শয়নকক্ষের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যাকারী জোসনার পিতা রবি হোসেন বলেন, আমার মেয়ে খুবই জেদি ছিলো। কয়েকদিন আগে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হলে নিজেই নিজের হাত কাটে। শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলো। অত্যান্ত জেদি হবার কারনেই সে নিজেই আত্মহত্যা করেছে। এতে কারোর বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। জোসনা খাতুনের মরদেহের সুরতহাল প্রস্তুতকারী চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসানুজ্জামান হাসান দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, নিহতের পরিবারের দাবি, জোসনা খাতুন দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্থতার কারণে আত্মহত্যা করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহমূলক কোনো কারণ পাওয়া যায়নি। নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। অভিযোগ না থাকায় লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জোসনার মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।