স্টাফ রিপোর্টার: সীমানা সংক্রান্ত জটিলতার কারনে মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় এককুগ হলেও চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার হাউলি ও পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন নির্বাচন হয়নি। ২০১১ সালে নির্বাচিতরায় চালাচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ। ইউনিয়নবাসী জানে না আর কতোদিন হবেনা নির্বাচন।
দামুড়হুদা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২১ জুন হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন হয়। ওই নির্বাচনে জামায়াত নেতা মাওলানা আজিজুর রহমান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। জামায়াত নেতা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করায় ওই পদটি শূন্য হয়। পরে ২০১৪ সালের ৮ আগস্ট উপ-নির্বাচন হলে এই ইউনিয়নে বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী শাহ মিন্টু চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে ২০১৬ সালে মেয়াদ শেষ হলে পরবর্তীতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ১৬ এপ্রিল নির্বাচনের দিন নির্ধারণ হয়। এসময় ইউনিয়নের আকবার আলী নামে এক ব্যক্তি ইউনিয়ন বিভক্তি নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। পরবর্ততে তা খারিজ হয়ে গেলে একইভাবে ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামের নিয়ামত আলীর ছেলে মজিবর রহমান একইভাবে ইউনিয়ন বিভক্তি নিয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। তখন প্রার্থীদেরসহ নির্বাচনের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও ভোট প্রয়োগের তিন আগে রিটের আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন স্থগিত করেন। সর্বশেষ রিট আবেদনকারী মজিবর রহমান বলেন, আমি ইউনিয়ন বিভক্তির জন্য রিট করেছিলাম। এখন ইউনিয়নে নির্বাচন চাচ্ছি।
ইউনিয়নের সদস্য শাহাজামাল বলেন, আমরা নিজেরায় রিট আবেদন করিয়েছিলাম। সরকার চাইলে নির্বাচন হবে আমি আর নির্বাচন করবো না। একই কথা বললেন, ইউপির (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দীন। ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাজি সহিদুল ইসলাম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ খোকন ও জাহাঙ্গীর আলম টিক্কা। ভোট গ্রহণের তিনদিন আগে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা যেমন হতাশ হন তেমনি আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হন। ইউনিয়নের জয়রামপুর গ্রামের সামসুল ইসলাম ও মারিক মিয়াসহ অনেকে বলেন, চেয়ারম্যান-মেম্বার যে-ই হোক না কেনো আমরা নির্বাচন চাই। পরিষদে কোনো কাজ করতে গেলে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে একই চেয়ারে থাকায় চেয়ারম্যান- মেম্বাররা সাধারণ মানুষকে তেমন মূল্য দিচ্ছেন না। আমরা দ্রুত নির্বাচন চায়।
হাউলি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ খোকন বলেন, চেয়াম্যনের পদ ধরে রাখতে তৎকালীন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শাহ তাদের নিজেদের লোক দিয়ে ইউনিয়ন বিভক্তির রিট করেন। আমি নিজে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলাম। আমি নিজে তদবির করলে প্রথম রিট আবেদন খারিজ হয়ে যায়। পুনরায় রিট করলে ভোট গ্রহণের তিন দিন আগে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এতে আমিসহ সকল প্রার্থী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তেমনি ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমার দলের নেতাকর্মীরা চান দ্রুত নির্বাচন দেয়া হোক। দল মনোনয়ন দিলে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবো।
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচন অফিসার সানজিদা বেগম বলেন, ইউনিয়ন বিভক্তি নিয়ে হাইকোর্টে রিট করায় দীর্ঘদিন ইউনিয়নটির নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। আমরা এর জবাব দিয়ে আসছি জটিলতা কেটে গেলেই দ্রুত নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে। একইভাবে উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিভাজন নিয়ে রিটের কারণে একই সময় থেকে বন্ধ রয়েছে ওই ইউপির নির্বাচন।