সরস্বতী খাল দখলে সরকারের বিরুদ্ধে বাদির করা মামলা খারিজ

জমি না ছাড়ায় দখলকারীর বিরুদ্ধে ১৫ ব্যক্তির মামলা

মেহেরপুর অফিস: পরপর দু’বার মামলা করে হেরে যাওয়ার পর মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার সরস্বতী খালের দখলীয় অংশ ছেড়ে দিতে ও অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে পত্র প্রেরণ করা হলেও দখলকারী কর্ণপাত না করে ওই জমি নিজের দাবি করে মেহেরপুর আদালতে জেলা প্রশাসকসহ ৪ জনকে বিবাদী করে মামলা করেন। আদালত বাদিপক্ষ মো. ফিত্তাজ মল্লিকের দায়ের করা এ মামলাও খারিজ করে দিয়েছেন। এতে সরস্বতী খালের দখলকৃত অংশ ফেরত পেতে সরকারপক্ষের আর বাধা নেই বলে মনে করেন স্থানীয়রা। তবে প্রশাসনসহ এলাকাবাসী খাস খতিয়ানের দখলীয় ওই জমি না ছাড়ায় স্থানীয় বিভিন্ন গ্রামের ১৫ জন বাদী হয়ে দখলকারীদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেছেন।
জানা যায়, মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জ বাজারস্থ সরস্বতী খাল দখলকারী মুজিবনগর উপজেলার মানিকনগর গ্রামের মৃত নফর মল্লিকের ছেলে মো. ফিত্তাজ মল্লিককে দখল ছাড়তে ও স্থাপনাসমূহ সরিয়ে নিতে মুজিবনগর উপজেলা প্রশাসন পত্র প্রেরণ করেন ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি। কিন্তু জমি না ছেড়ে ও স্থাপনা না সরিয়ে মো. ফিত্তাজ মল্লিক বাদি হয়ে মেহেরপুর ডেপুটি কমিশনার (ডিসি), অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (রাজস্ব), মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) বিবাদী করে মেহেরপুর বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা করেন। গত বছরের ৩ নভেম্বর বিজ্ঞ আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসীর মধ্যেও স্বস্তি ফিরেছে। মুজিবনগর উপজেলার মানিকনগর গ্রামের মৃত হিসাব মল্লিকের ছেলে মো. নূরুল ইসলাম মল্লিক বলেন, জন্ম থেকে দেখে ও শুনে আসছিলাম কেদারগঞ্জ বাজারসংলগ্ন সরস্বতী খালের ধার ঘেসে কারো কোনো জমি কিংবা কোনো স্থাপনা ছিলো না। বিগত কয়েক দশক ধরে অবৈধ পথে কাগজপত্র করে সেখানে বসবাস করে আসছেন ফিত্তাজ মল্লিক ও তার পরিবার। তিনি বলেন, মুজিবনগরের প্রবেশ দ্বারে সরকারি জমি নিজে দখল করে ভোগ করে আসছেন ফিত্তাজ মল্লিক। যা স্থানীয়দের কাছে ছিলো বিরক্তিকর ও সরকারে কাছ ছিলো গলার কাঁটা।
নূরুল ইসলাম মল্লিক আরও বলেন, মামলায় হেরে যাওয়া ফিত্তাজ মল্লিককে দখলীয় খাস খতিয়ানের অবৈধ স্থাপনা ও জমি ছেড়ে দিয়ে সরস্বতী খালের পানি ব্যবহারসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিতে অনুরোধ করেন। এরপরও ফিত্তাজ মল্লিক গং কর্ণপাত না করে দাম্ভিকতা দেখায়। এতে এলাকার কয়েকটি গ্রামের জনগণ ক্ষিপ্ত হন এবং আমিসহ বিভিন্ন গ্রামের ১৫ জন বাদি হয়ে মো. ফিত্তাজ মল্লিক ও তার ভাই মৃত আবুল হোসেন মল্লিকের ওয়ারিশসহ মোট ৭ জনকে বিবাদী করে মেহেরপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা করেছি।
উল্লেখ্য, মেহেরপুর জেলা পরিষদের এক শতক ও সরকারি খাস খতিয়ানের ১৬ শতক জমি ফিত্তাজ মল্লিক দখল করে নিজ নামে কাজপত্র করেন। যা মানিকনগর মৌজায় সিএস ৯, এসএ-২২, আর এস- ২৮৫, দাগ নং এসএ-৬১৯ ও আর এস ৭০২ দাগ। ওই জমি যাতে কেউ দখল করতে না পারে তার জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে সরকারের নামে কেস করেন। তবে ১৬ শতক জমির দেওয়ানী মামলা নং ৩৫৩/৯৪ ও ২৫০/৯৭ তে আদালতের রায়ে বাদি পক্ষ পরাজিত হলে সরকারি খাস খতিয়ানে চলে যায় উক্ত ১৬ শতাংশ জমি।

Comments (0)
Add Comment