স্টাফ রিপোর্টার: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গায় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা ডিসি সাহিত্য মঞ্চে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে জেলা প্রশাসক একযোগে ডিসি সাহিত্য মানুষের পাদদেশে মোমবাতি প্রজ্বলন করেন। অতিথিগণ মঞ্চ ত্যাগ করে সামনের সারিতে বসার সাথে সাথে চুয়াডাঙ্গা জেলা শিল্পকলা একাডেমির নবীন শিল্পীদের কন্ঠে বেজে ওঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই বিখ্যাত গান ‘গ্রামছাড়া ওই রাঙামাটির পথ আমার মন ভুলায় রে…!’ এভাবে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ব্যতিক্রম আয়োজনের মধ্য দিয়ে মাঝে মাঝে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান ও কবিতা আবৃত্তি এবং রবীন্দ্র সাহিত্য ভান্ডার নিয়ে অতিথিদের জ্ঞানগর্ভ আলোচনা সৃষ্টি করে অনুষ্ঠানের আলাদা বৈচিত্র্য। আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক নাজমুল হামিদ রেজা। প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। প্রধান অতিথি বলেন, আমাদের রবীন্দ্রনাথকে জানতে হবে। রবীন্দ্র রচনাবলীর মর্মবাণী বুঝতে হবে। রবীন্দ্রনাথ আমাদের দেশকে ভালোবাসতে ও দেশের জন্য জীবন দিতে শেখায়। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথের কবিতা-গান বাঙালির আন্দোলন, সংগ্রাম ও সংকটে প্রেরণার উৎস। তিনি লেখনির মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মানুষকে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন। বিশ্বসাহিত্যের এক উজ্জ্বলতম নক্ষত্র এবং বাংলা ও বাঙালির অহংকার রবীন্দ্রনাথ। তিনি ছিলেন শ্রমিক, কৃষক, শিশু-কিশোর সবার আপনজন। শিশুদের জন্য রচনা করেছেন অসংখ্য কবিতা, ছড়া ও গান। শিশুদের রবীন্দ্রনাথকে জানার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তমনের মানুষ হিসেবে বড় হতে হবে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন প্রথম বাঙালি, প্রথম ভারতীয় যিনি বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদান রেখে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। বাংলা ও বাঙালি সাহিত্যের এমন কোন দিক নেই যেদিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদচারনা ছিলো না। তিনি ছিলেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রবাক পুরুষ, উজ্জ্বল নক্ষত্র, মহাসমুদ্র। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ রাবীন্দ্রিক অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে রবীন্দ্রনাথের গান কবিতা ও লেখনীর উপরে বিশদ আলোচনা করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আব্দুর রশিদ। এছাড়া আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাইফ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আরাফাত রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. কবীর হোসেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক পত্নী মেহনাজ খান বাঁধন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূঁইয়া, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল-আমিন, এনডিসি সাদাত হোসেনসহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ও আমন্ত্রিত অতিথিগণ। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক ড. আব্দুর রশিদ ও অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মুন্সি আবু সাঈফকে শুভেচ্ছা পুরস্কার তুলে দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান ও তার পত্নী মেহনাজ খান বাঁধন।