মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর শহরের শেখ পাড়ায় এক মধ্যে বয়সী স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে রাতভর পালাক্রমে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নির্যাতিত নারী (৩৫) বাদী হয়ে গতকাল বুধবার সকালে ৩ জনকে আসামি করে মেহেরপুর সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় মেহেরপুর শহরের শেখপাড়ার মৃত আমিন উদ্দিনের ছেলে রাব্বী (২৫), আব্দুস সামাদের ছেলে শাকিল (২২) ও আনারুলের ছেলে ইমরানকে (২৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনার বিবরণে নির্যাতিতা নারী বলেন, আমি লালনের ভক্ত। এ সুবাদে আমি গত শনিবার কালাচাঁদপুর এক নারীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। তিনি বাড়িতে ছিলেন না। পরে আমি বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিই। এসময় কোনো গাড়ি/অটো পাচ্ছিলাম না। হাঁটতে হাঁটতে আসার কারণে একটু সন্ধ্যায় হয়ে যায়। শহরের শেখ পাড়ায় পৌঁছানোর পর রাস্তায় আমাদের এক ভক্ত আহসানের সাথে দেখা। আহসান হচ্ছে শেখ পাড়ার তাজুল ইসলামের ছেলে। আহসান আমার পূর্ব পরিচিত। আহসানের সাথে দেখা হওয়ার পরে আমাকে আম ও লিচু দেয়ার জন্য পাশের বাগানে নিয়ে যায়। ওই বাগান আহসান পাহারা দেয়। বাগানের ভেতরে গিয়ে দেখি দুজন ছেলে আছে। ওরা আহসানের সাথে থাকে। ওরা সবাই বলল বুবু কয়েকটি আম খেয়ে যান। তাই আমিসহ সবাই বাগানের ভেতর একটি ছোট্ট শান-বাঁধানো জায়গায় বসেছিলাম। হঠাৎ করেই রাব্বি, শাকিল ও ইমরান এসে আমাদেরকে গালাগালি করে। বলে তোরা এখানে কি করছিস এই বলেই আহসানসহ ওই দুটি ছেলের গলায় ছুরি ধরে জিম্মি করে। আমাকে দুজন এসে চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে যখন আমি বাধা প্রদান করি তারা তখন আমার সাথে আচরণ আরও খারাপ করে। তারপর আমাকে বাগানের একটি ঘরে নিয়ে পালাক্রমে রাতভর ধর্ষণ করে। পরে আবার মাঝরাতে তারা হেরোইন সেবন করে আমাকে ধর্ষণ করে এবং আমাকেও খাওয়ানো চেষ্টা চালায়। ভোর রাতে ওরা চলে যাওয়ার সময় আমার মোবাইল, ব্যাগ ও ব্যাগে থাকা ভোটার আইডির কপি, ছবি ও কিছু টাকা নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা বলে ৫ হাজার টাকা নিয়ে এগুলো নিতে এখানেই আসবি। আর এখন থেকে তোকে রোজ আসতে হবে। তারপর আহসানের একটি ছেলে আমাকে হাসপাতাল পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে যায়।
আহসান জানান, আমি কয়েক বছর আগে সাইজীর ভক্ত হয়েছি সেই সুবাদে নাজমা বুবুর সাথে আমার পরিচয়। নাজমা বুবু কালাচাদপুর থেকে আসার সময় রাস্তায় আমার সাথে দেখা হয়। বুবুকে আমি বলি বুবু দেখা যখন হয়ে গেলো তখন কিছু আম আর লিচু আছে নিয়ে যা। তখন আমি নাজমা বুবুকে নিয়ে বাগানের খামারে নিয়ে আসি। কিছু আম আর লিচু দিলাম বুুবুকে। আর কিছু খাওয়ার জন্য দিলাম। বুবু বলল সবাই এক সাথে খাই। আমরা চারজন একসাথে বসে আম আর লিচু খাচ্ছি ঠিক তখন রাব্বি, শাকিল ও ইমরান এসে আমাদেরকে গালাগালি করে। এক পযার্য়ে আমাকেসহ আর দুটি ছেলেকে গলায় ছুরি ধরে নাজমা বুবুর সাথে সারারাত খারাপ কাজ করে। ভোরে যাওয়ার সময় আমার সাথে ওই তিনজন টাকা ও আমার মালিকের একটি মোটরসাইকেল দাবি করে। পরের দিন একটি ছেলেকে পাঠাই আমার কাছে টাকার জন্য। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে ভয় দেখায়।
এসআই অর্জুন কুমার সরকার জানান, বাদীর মামলার ভিত্তিতে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠানো করা হবে।