মৃত্যুর মিছিলে আরও ১৬ জন : নতুন শনাক্ত ৯৩০

 

দেশে করোনায় মোট আক্রান্ত ২০ হাজার ৯৯৫ জন : মৃত্যু ৩১৪

স্টাফ রিপোর্টার: করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১৬ জন। এটি একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। ফলে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩১৪ জনে। একই সময়ে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৯৩০ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২০ হাজার ৯৯৫ জনে। শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। বুলেটিন উপস্থাপন করেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। ঢাকার মধ্যে ২০টি ল্যাব থাকলেও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ১২টি ল্যাবে এবং ঢাকার বাইরের ২১টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও ৬ হাজার ৫০১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় আগের কিছু মিলিয়ে ৬ হাজার ৭৮২টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ৬৭ হাজার ২৯৪টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ৯৩০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৯৯৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১৬ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩১৪ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২৩৫ জন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন চার হাজার ১১৭ জন। নতুন করে যারা মারা গেছেন তারা সবাই পুরুষ। এদের মধ্যে একজন ত্রিশোর্ধ্ব, পাঁচজন চল্লিশোর্ধ্ব, ছয়জন পঞ্চাশোর্ধ্ব, তিনজন ষাটোর্ধ্ব এবং একজন সত্তরোর্ধ্ব। এই ১৬ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে দুইজন এবং রংপুর বিভাগে মারা গেছেন দুইজন। ঢাকা বিভাগের মধ্যে যারা মারা গেছেন, তাদের সাতজন রাজধানীর, দুজন ঢাকা জেলার এবং গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ ও নরসিংদীর একজন করে বাসিন্দা ছিলেন। গত শুক্রবারের (১৫ মে) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ জন মারা গেছেন। আট হাজার ৫৮২টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ২০২ জনের দেহে, যা সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের সংখ্যা কমলেও বেড়েছে মৃত্যু, যা একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রাণহানিরও রেকর্ড। এর আগে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ১৯ জনের। এটি জানানো হয় গত ১৩ মের বুলেটিনে। শনিবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৩৪৯ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন তিন হাজার ৪৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৫১ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৫৩০ জন। সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে আট হাজার ৯৩৪টি। তন্মধ্যে রাজধানী ঢাকায় দুই হাজার ৯০০টি এবং ঢাকার বাইরে আছে ছয় হাজার ৩৪টি। এসব হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা আছে ৩২৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০২টি। আইসিইউ শয্যা ও ডায়ালাইসিস ইউনিট বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৫১০ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে দুই লাখ ৩৬ হাজার ৯১৪ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৭০৪ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ৮৮ হাজার ৭৭৩ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৪৮ হাজার ১৪১ জন। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য ৬১৭টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ১৬৫ জনকে। ডা. নাসিমা করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানান বুলেটিনে। তিনি বলেন, আপনার সুরক্ষা আপনার হাতে। নিজের সুরক্ষার বিষয়ে সচেতন হই, সতর্ক থাকি। টাটকা শাক-সবজি ও প্রোটিনজাতীয় খাবার যেমন ডিম এবং তরল খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে। ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হলেও এখন করোনাভাইরাসের কবলে গোটা বিশ্বই। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪৬ লাখ। মৃতের সংখ্যা তিন লাখ আট হাজার ছাড়িয়েছে। তবে সাড়ে ১৭ লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। তারপর দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও। ভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি আরও নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও এরই মধ্যে পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার শর্তে ১০ মে থেকে সবার জন্য খুলে দেয়া হয়েছে মসজিদও।

Comments (1)
Add Comment
  • মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান সোহাগ

    সরোজগঞ্জ বাজারে চলছে গার্মেন্টসের ব্যবসা।
    ব্যবসার ধরন গার্মেন্টসে ক্রেতাদেরকে ভেতরে দিয়ে বাইরে থেকে তালা বদ্ধ্য করে চালিয়ে যাচ্ছে সরকারি আইন না মেনে