ভারী যানবাহনে মাটি বহন করায় একজনের জরিমানা 

গাংনী উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ

গাংনী প্রতিনিধি: অবৈধভাবে পুকুর খনন করে আবাদি জমি ধ্বংসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে গাংনী উপজেলা প্রশাসন। গতকাল বুধবার গাংনী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে গা-ঢাকা দিয়েছে পুকুর খনন কাজের সাথে জড়িতরা। গ্রামীণ সড়কে ভারী যানবাহন চালিয়ে মাটি পরিবহনের অপরাধে কালু মিয়া নামের এক জনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জানা গেছে, সম্প্রতি গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে অবৈধভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে এসকেবেটর দিয়ে। ইটভাটাগুলোতে বিপুল পরিমাণে মাটির চাহিদা থাকায় পুকুর খনন লাভজনকখাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে অনেকের কাছে। পুকুর খননের মাটি এবং তিন ফসলি জমির উপরি অংশের মাটি কেটে ইটভাটাগুলোতে বিক্রি হচ্ছে। ইটভাটা মালিকদের প্রলোভনে পড়ে সাধারণ চাষিরা মাটি কাটার মতো আইন বিরোধী কাজে লিপ্ত হচ্ছেন।

জানা গেছে, গাংনী উপজেলার বেতবাড়িয়া গুচ্ছ গ্রামের পাশের মাঠে মাটি কাটা শুরু করে টুটুল মোল্লা নামের এক ব্যক্তি। দিনের বেলায় খনন কাজ বন্ধ থাকলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে রাত ব্যাপী চলে খনন কাজ। ফলে সারারাত ধরে মাটি বহন করে নিয়ে যাওয়া হয় বিভিন্ন ইটভাটায়। এখানে পুকুর খননের ফলে আশপাশের আবাদি জমি ধসের আশঙ্কা দেখা দেয়। যার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী জমি মালিকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করেন।

এদিকে গতকাল বুধবার গাংনী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে বেতবাড়িয়ায় পুকুর খননস্থলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাদির হোসেন শামীম। তবে ঘটনাস্থলে তখন মাটি কাটার কোনো যন্ত্রপাতি ছিলো না। ভ্রাম্যমাণ আদালতে পক্ষ থেকে মাটি না কাটার জন্য লোক মারফত খবর দেয়া হয় টুটুল মোল্লার কাছে। যার প্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার রাতে মাটি কাটা ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের সময় চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার উসলামপুরের আব্দুস সালামের ছেলে কালু মিয়া তার গাড়িতে অন্য মাঠ থেকে মাটি বোঝাই করে একটি ইটভাটায় যাচ্ছিলেন। গ্রামীণ সড়কে ভারী যানবহান চালিয়ে মাটি পরিবহন করার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত কালু মিয়াকে আটক করে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩এর ৫(৪) ও ১৫ ধারায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। জরিমানা পরিশোধ এবং ভবিষ্যতে গ্রামীণ সড়কে এমন মাটি পরিবহন করবে মর্মে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পান কালু মিয়া।

এদিকে অবৈধভাবে পুকুর খনন বন্ধের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের কঠোর অবস্থানে এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এ অভিযান চলমান থাকলে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এলাকার অনেকে।

Comments (0)
Add Comment