স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় ছেলেকে আত্মীয় বাড়ি রেখে এসে অপহরণ নাটক সাজাতে সদর থানায় জিডি। অবশেষে ভাইকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফাঁসলেন সদর উপজেলার দীননাথপুর নিমতলাপাড়ার সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মারজান বেগম। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মাহাব্বুর রহমান কাজলের বিচক্ষণতায় বেরিয়ে এসেছে প্রকৃত সত্য। পুরো দুইদিনের চেষ্টায় গতকাল রোববার বিকেলে সফল হয়েছেন ওসি মাহাব্বুর। উদঘাটন করেছেন প্রকৃত ঘটনা। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাব্বুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দীননাথপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম তার ১২ বছর বয়সী ছেলে আপনকে খুঁঁজে পাচ্ছেন না মর্মে ২৭ আগস্ট সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৬ তারিখে সন্ধা সাড়ে ৭ টার দিকে একই গ্রামে তার নানীর বাড়িতে যায় রাতের খাবার দিতে। সেখান থেকে আপন আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ খবর নিয়ে কোন সন্ধান না পেয়ে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মারজান বেগমের নিকট বিষয়টি যানতে চাইলে তিনি পুলিশকে বলেন, আমার খালা ও ভাই ইউছুপ আলীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সাথে দ্বন্দ চলে আসছে। তারাই আমার ছেলেকে অপহরন করতে পারে। ওসি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিতে শুরু করি। এভাবে চলার পর আমরা ইউছুপকে খুঁজতে থাকি। ইউছুপকে না পেয়ে তার মোবাইল ফোনে কল করে বন্ধ পেলে আমাদের সন্দেহ বাড়তে থাকে। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করি আসলেই এটা অপহরণ। বিষয়টি আমরা পুলিশ সুপারসহ কর্তৃপক্ষকে জানায়। ২৭ তারিখ রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। গতকাল রোববার দুপুরে খবর আসে ওই ছেলেকে পাওয়া গেছে। আমরা প্রথমে আপনের সাথে মোবাইলে কথা বলে বিষয়টি জানার চেষ্টা করি। আপন বলে, আমার হাত,পা বেঁধে মাঠের মধ্যে ফেলে রাখে। অনেক কষ্টে রোববার সকালে আমি সেখান থেকে ফিরে আসি। আপনকে একের পর এক জিজ্ঞাসাবাদে সে আসল ঘটনা শিকার করে। আপন বলেছে, সে বলে আমি একটা বাড়িতে গিয়ে ছিলাম। পরে গতকাল বিকেলে আপনসহ তার বাবা-মাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসা করি এবং আপনকে তারা কোথায় রেখেছিলো সেখানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম এরই মাঝে আপনের মা মারজান বেগমের মাথা ঘুড়ে পড়ে যায়। আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিই। মারজান বেগমের আচার-আচরণে আমাদের সন্দেহের আর কিছু বাকি থাকে না। কৌশলে মারজান বেগমকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আসল ঘটনা বলতে থাকে। মারজান বেগম বলেন, আমার ভাই ইউছুপ আলীকে ফাঁসানোর জন্য আমার ছেলে আপনকে গাইদঘাটে আমার এক আত্মীয় কালামের বাড়িতে রেখে আসি। পরে থানায় ডায়েরি করি। আমার ভুল হয়ে গেছে আমাকে ক্ষমা করে দেন। ওসি মাহাব্বুর রহমান বলেন, মিথ্যা দিয়ে কখনও সত্যকে আড়াল করা যায় না। সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে এবং এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্যথায় শাস্তি পেতে হবে।