স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দোস্ত গ্রামে চুরির অপবাদ দিয়ে ৫ম শ্রেণির একছাত্রকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। মাসুম শিশুকে বেঁধে রেখে প্রায় আধাঘণ্টা নির্যাতনের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। নির্যাতনকারীকে গ্রেফতারের দাবি তুলেছে সচেতনমহল। তবে অভিযুক্ত মায়ের দোয়া ফ্যাশন হাউজের মালিক পক্ষ বলেছে টাকা চুরি হাতেনাতে ধরেই ওই শিশুকে বেঁধে রাখা হয়েছিলো। এলাকার লোকজন বলেছে ওই শিশু টাকা চুরি করতে পারে না। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দোস্ত গ্রামের মনোয়ার হোসেনের ছেলে আবদুর রহমান (১০) দোস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র। গতকাল রোববার দুপুরে টিফিন পিরিয়ডে সে স্কুলের নিকটবর্তী মায়ের দোয়া ফ্যাশান হাউজে খাবার কিনতে যায়। দোকানের নাম ফ্যাশন হাউজ হলেও সেখানে ফাস্ট ফুডসহ মনোহারি সামগ্রী পাওয়া যায় বলে জানায় এলাকার লোকজন। আবদুর রহমান দোকানে খাবার কিনতে গেলে দোকানদার টাকা চুরির অভিযোগ তুলে শিশু আবদুর রহমানকে দড়ি দিয়ে দোকানের সামনের বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে রাখেন। পথচারীরা শিশু আবদুর রহমানকে এভাবে বেঁধে নির্যাতনের কারণ জানতে চাইলে দোকান মালিক জানান, ‘সে দোকান থেকে টাকা চুরি করেছে। আমার দোকান থেকে প্রায়ই টাকা চুরি হয়। এই কারণে তাকে বেঁধে রেখেছি যাতে আর কেউ টাকা চুরি করতে সাহস না পায়।’ এ ব্যাপারে দোস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোমিন হোসেন বলেন, ‘৫ম শ্রেণির ছাত্র আবদুর রহমানকে টাকা চুরির অভিযোগে বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়েছে জানতে পারি। সাথে সাথে আমি ওই দোকানে যেয়ে আবদুর রহমানকে মুক্ত করি। আবদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে সে জানায় মিথ্যা দোষ দিয়ে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে। তাছাড়া আবদুর রহমানের কাছে আমি কোনো টাকা পায়নি। একজন দোকানদার টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে এভাবে একটা শিশু শিক্ষার্থীকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন করবে আমি ভাবতেও পারছি না। আমি দোকানদারকে বলেছি আমার ছাত্র যদি কোনো টাকা নিয়েই থাকতো তবে কেন আমাকে জানানো হলো না। তাকে কেন নির্যাতন করা হলো? প্রয়োজনে আমরা ক্ষতিপূরণ দিতাম। চুরির অপবাদ দিয়ে শিশুর প্রতি এহেন আচরণ কেউ আশা করে না।’ এ ব্যাপারে স্থানীয় বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু সালেহ জানান, ‘আমি বিষয়টি পরে জেনেছি। শিশুকে এভাবে খুঁটিতে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা আইনের চোখে অন্যায় এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’ এ ব্যাপারে জানার জন্য অভিযুক্ত দোকান মালিক আলী আহমেদের দোকানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। দোকান মালিক আলী আহমেদের মেয়ে রোমানা খাতুন বলেন, ‘আমি নিজে টাকাসহ ধরেছি আবদুর রহমানকে তাই বেঁধে সামান্য শাস্তি দিয়েছি। এলাকার অনেক সচেতন ব্যক্তি বলেছে, মাসুম শিশু আবদুর রহমানকে যিনি খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন করেছেন। তাকে গ্রেফতার করা উচিত।