ষ্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা শহরের পলাশপাড়া থেকে মনিশা আক্তার মিমি (২৬) নামে প্রবাসীর স্ত্রী ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের জানায়। পরে তারা উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মনিশা আক্তার মিমি চুয়াডাঙ্গা শহরের পলাশপাড়ার সৌদি প্রবাসী লিটন হোসেনের স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি কুষ্টিয়া।
শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছে, দীর্ঘদিন অসুস্থতার কারণে গলাই ফাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে বাবার বাড়ির লোকজনের দাবি, মিমিকে নির্যাতন করা হতো। হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, প্রথমিক তদন্তে হত্যা কিংবা নির্যাতনের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তদন্তের কাজ পরিস্কার রাখতে আগামীকাল (আজ) শনিবার মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে।
নিহত মিমির বাবা বিল্লাল হোসেন বলেন, মেয়ে জামায় সৌদি আরবে থাকার সুবাদে মিমি তার ছেলে ও শাশুড়ির সাথে চুয়াডাঙ্গা শহরের পলাশপাড়ায় থাকতো। মাঝেমধ্যে তার শাশুড়ি ও ননদ আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো বলে জেনেছি। আমার মেয়ে নামাযি ছিল। সে আত্মহত্যা করতে পারেনা। তারা হত্যার পর ঝুলিয়ে রেখেছে বলে দাবি করেন তিনি।
নিহত মিমির ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মাহিম বলেন, দাদি রোমেছা বেগম ও ফুফু রিক্তা প্রায় আমার
আম্মুর সাথে খারাপ ব্যবহার করতো। মাঝেমধ্যে মারধরও করতো। গতকাল আমি বাইরে ছিলাম। সন্ধার পর বাড়ি ফিরে দেখি আম্মুকে সবাই হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে।
মিমির শাশুড়ী রোমেছা বেগম বলেন, আমাদের সাথে মিমির খুবই ভালো সম্পর্ক ছিল। সে বেশ কয়েকমাস অসুস্থ ছিল। আমরা তাকে কখনো নির্যাতন করিনি। হইতো পরিবারে কাজের জন্য উত্যপ্তবাক্য বিনিময় হয়েছে। আমরা কেন তাকে হত্যা করতে যাবো? আমার পুত্রবধু কেন আত্মহত্যা করেছে এটা আমরাও বুঝতে পারছিনা। সন্ধার পর নিজ ঘরে মিমিকে ঝুলতে দেখি আমি। পরে চিৎকার করলে প্রতিবেশিরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
উদ্ধারকারী প্রতিবেশি রাজু বলেন, মিমিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে তার শাশুড়ি চিৎকার করে। আমিসহ কয়েকজন ঘটনাস্থলে পৌছে মিমির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তাসনিম আফরীন জ্যোতি বলেন, মিমির গলাই একটি ক্ষতচিহ্ন ছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষনা করা হয়। হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ বলেন, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে হত্যা কিংবা নির্যাতনের কোন আলামত বা তথ্য পাওয়া যায়নি। দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থতার কারণে আত্মহত্যা করেছে মনে হচ্ছে। পুলিশের তদন্তের জন্য মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে। প্রতিবেদন আসলেই জানা যাবে আত্মহত্যা নাকি হত্যা!