নড়াইলের লোহাগড়া থানার পুলিশের দু’জন এএসআইকে মারপিট করে গুলিসহ পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে গেছে একদল দুর্বৃত্ত। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে দুইজন নারীকে আটক করা হয়েছে।
জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমড়ি গ্রামের ওহিদ সরদার সমর্থিত লোকজনদের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী মাউলি গ্রামের রোকনউদ্দিন মোল্যা ও লুটিয়া গ্রামের ফিরোজ শেখ সমর্থিত লোকজনদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলে আসছিল। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার ১২ টার দিকে ওহিদ সরদার সমর্থিত টিকেরডাঙ্গা গ্রামের বুলু সরদারকে তার নিজ বাড়ি প্রতিপক্ষ রোকনউদ্দিন ও ফিরোজ সমর্থিত লোকজন অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি পক্ষ কুমড়ি এলাকার টিকেরডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সংঘাতের প্রস্তুতি নেয়। খবর পেয়ে লোহাগড়া থানার এএসআই মীর আলমগীর ও মিকাইল হোসেন ঘটনাস্থলে পৌছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বেধড়ক লাঠিচার্জ করেন। পুলিশের লাঠিচার্জে ওহিদ সরদার সমর্থিত কুমড়ি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ সরদার (৭৫) ও সনি সরদারসহ ৭-৮ জন কমবেশি আহত হয়। এরপর ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই দু’জন এএসআইয়ের ওপর চড়াও হয়ে তাদের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে এবং এএসআই মীর আলমগীরের কাছে থাকা চীনের তৈরি সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু (৭.৬২) পিস্তল ও ৮ রাইন্ড গুলি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। গুরুতর আহত ওই দু’জন পুলিশের এএসআইকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানজিলা সিদ্দিকা, লোহাগড়া থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), জেলা বিশেষ শাখাসহ (ডিএসবি) বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং প্রায় ৩ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বিকালে পার্শ্ববর্তী মাউলি এলাকার একটি পাকা সড়কের পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় লুন্ঠিত অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সৃষ্ট ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে জাহানারা বেগম (৫৫) ও সোহানা রোজিকে (৩২) আটক করা হয়েছে এবং পুলিশকে মারপিট করে অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে পুলিশি গ্রেফতার আতঙ্কে কুমড়ি গ্রামসহ আশপাশের এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।