আলমডাঙ্গায় নিখোঁজের ৬ দিন পর মাথাভাঙ্গা নদী থেকে লাশ উদ্ধারের রহস্য উন্মোচন
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: রাতে নিখোঁজের ৬ দিন পর গ্রামের মাথাভাঙ্গা নদী থেকে আলমডাঙ্গার নগরবোয়ালিয়ার যুবতী গৃহবধূকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়ার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। স্বামীর ব্যবসায়ী পার্টনার প্রতিবেশী নেক আলীকে গ্রেফতারের পর পুলিশের নিকট তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন বলে জানা যায়। নেক আলীর সাথে পরকীয়ার সম্পর্কের পরেও গৃহবধূ নতুন করে অন্য পুরুষের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়ালে কৌশলে ডেকে নিয়ে নেক আলী তাকে হত্যা করে।
থানা পুলিশসূত্রে জানা যায়, গত ২৪ জানুয়ারি বিকেলে হাটবোয়ালিয়া ফাঁড়ি পুলিশ মাথাভাঙ্গা নদী থেকে নগরবোয়ালিয়া গ্রামের পপি নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছিলো ধর্ষণ শেষে যুবতীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ নদীর পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ স্বামী ও প্রতিবেশী এক যুবককে আটক করে। প্রতিবেশী যুবক নেক আলীর বিরুদ্ধে গুঞ্জন উঠলে তিনি নিরুদ্দেশ হন।
শুরু থেকেই নেক আলীকে নিয়ে পুলিশের যতেষ্ঠ সন্দেহ ছিলো। তাকে আটক করতে পুলিশ মরিয়া হয়ে ওঠে। গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার বেড়া গ্রামের মহসিন আলীর বাড়ি থেকে তাকে আটক করে।
আটকের পর দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে নেক আলী তার প্রতিবেশী গৃহবধূকে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) একরামুল হোসাইন জানান। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন গৃহবধূর সাথে তার পরকীয়া সম্পর্ক ছিলো। মাঝে মধ্যে অল্প বুদ্ধিসম্পন্ন স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়ে তারা মিলিত হতেন। এরই এক পর্যায়ে গৃহবধূ গোপনে মোবাইলফোনে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার নারায়নকান্দি গ্রামের স্বাধীন নামের এক যুবকের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ঘটনার রাতে নেক আলী গৃহবধূকে মোবাইলফোনে ডেকে নিয়ে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে। লাশ উদ্ধারের পর তিনি নিরুদ্দেশ হন।
এলাকাসূত্রে জানা যায়, প্রায় ১১ বছর পূর্বে নগরবোয়ালিয়া গ্রামের অল্প বুদ্ধিসম্পন্ন যুবক তুহিন আলীর (৩২) সাথে একই উপজেলার বেলগাছি গ্রামের নূর ইসলাম ভোলার মেয়ে পপি খাতুনের (২৬) বিয়ে হয়। তাদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারি রাতে ঘুম ভেঙে গেলে তুহিন আলী তার স্ত্রী পপি খাতুনকে খুঁজে পাননি। তারপর থেকে গৃহবধূ নিখোঁজ ছিলেন। দীর্ঘ ৬ দিন পর বাড়ি থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত মাথাভাঙ্গা নদীর পানিতে লাশ ভাসতে দেখা যায়। গ্রামবাসি এ ঘটনা পুলিশকে জানালে পুলিশ বিকেলে নদী থেকে লাশ উদ্ধার করে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।