দামুড়হুদা প্রতিনিধি: সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইচ্ছে মাফিক অফিস করার অভিযোগ উঠেছে দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন (ভূমি) সহকারী কর্মকর্তা সাদ আহমেদের বিরুদ্ধে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সপ্তাহের ৫ কর্মদিবসে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কার্যালয়ে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি অফিসে উপস্থিত হন বেলা সাড়ে ১১টার পর। আবার কোনো কোনো দিন দুপুরও গড়ায় তার অফিসে আসতে। ততক্ষণে এই কর্মকর্তার কার্যালয়ের কক্ষের দরজায় ঝুলে মস্ত বড় একটি তালা। সরকারিভাবে নির্ধারিত সময়ে সেবা গ্রহীতারা কর্মকর্তাকে না পেয়ে অফিস চত্বরে অলস সময় পার করেন ঘন্টার পর ঘন্টা। এতে নিত্যদিন ভোগান্তির স্বীকার হতে হচ্ছে ভূমি সেবাগ্রহীতাদের। এছাড়াও অনলাইনে কাজ ইচ্ছে না বলা যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে এই কার্যালয়টির কর্মকর্তা, কর্মচারীদের।
জানা গেছে, দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে সাদ আহমেদ যোগদানের পর থেকেই সরকারি বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই এ অফিসটি চলছে ঢিলেঢালা ও ইচ্ছে মাফিক। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করেই ইচ্ছে মাফিক অফিস করছেন নিত্যদিন। ফলে প্রতিনিয়তই হয়রানির স্বীকার হতে হচ্ছে ভূমি সম্পৃক্ত সেবাগ্রহীতাদের। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫পর্যন্ত অফিস কার্যদিবসে তিনি আসেন কোনো কোনো দিন বেলা সাড়ে ১১টায়; আবার কোনো কোনো দিন দুপুর ও গড়ায় তার অফিসে আসতে। দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের সেবাপ্রত্যাশীরা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও দেখা পাচ্ছেন না এই কর্মকর্তার। একদিন, দুদিন, তিন দিন পর যখন আলাউদ্দিনের প্রদীপ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী (কর্মকর্তার) দেখা পাচ্ছেন তখন আবার ফিরতে হচ্ছে অনলাইনে সার্ভারে কাজ হচ্ছে না এমন ভূতুড়ে ওজুহাতে। তার এই ইচ্ছে মাফিক অফিসে আসাকে দায়িত্ব অবহেলার শামিল বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীসহ সচেতন মহল।
একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে কয়েকদিন অফিসটি পর্যবেক্ষণ করার পর গতকাল সোমবার দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন (ভূমি) সহকারী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গিয়ে চোখে পড়ে কর্মকর্তার অফিসের দরজায় ঝুলছে মস্ত বড় একটা তালা। ইউনিয়ন (ভূমি) সহকারী কর্মকর্তা অনুপস্থিত। কথা হয় একাধিক সেবাপ্রত্যাশীদের সাথে তাদের অভিযোগ ওই কর্মকর্তা প্রতিদিন অফিসে আসেন নিজের ইচ্ছে মতো। কোনো দিন বেলা ১১টা, আবার কোনো দিন দুপুর ১২টায়। অফিসের এক কর্মচারীকে কর্মকর্তা কখন আসবেন জিজ্ঞেস করতেই বললেন একটু পরেই স্যার চলে আসবেন। কোথায় আছেন সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারলেন না সে।
দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন (ভূমি) সহকারী কর্মকর্তা সাদ আহমেদের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করার পর কল রিসিভ করলে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমাদের তো অনেক কাজ থাকে, সেসব কাজে যেতে হয়। যেমন মিটিং, এসিল্যান্ড অফিস, মাটিকাটা ও মামলার তদন্ত করতে হয়। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আপনি কোথায় ছিলেন জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, আমি মামলার তদন্ত কাজে ছিলাম; রাখেন আপনি বলে ফোন কেটে দেন।
দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেএইচ তাসফিকুর রহমান বলেন, এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। যদি ঘটনা সত্যি হয় তবে তদন্ত করে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।