দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা মডেল থানার এএসআই (সহকারী উপ-পরিদর্শক) মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের নামে উৎকোচ গ্রহণসহ বিবাদীর পরিবারের লোকজনকে গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে। পুলিশের ভাষ্যমতে ও ঘটনাসূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন আগে দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের জয়রামপুর গ্রামের মালিথাপাড়ার সামছদ্দীনের ছেলে রবিউল ইসলামের সাথে একই গ্রামের হাজীপাড়ার রাজ্জাক ড্রাইভারের ছেলে রাজু আহমেদ ও নিয়ামত মোল¬ার ছেলে মেহেদী হাসানের মারামারির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে রাজু আহমেদ ও মেহেদী হাসানকে বিবাদী করে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগটি তদন্তের দায়িত্ব পান দামুড়হুদা মডেল থানার এএসআই মামুন। গত শুক্রবার রাতে অভিযোগ তদন্তের জন্য রাজুর বাড়িতে যান এএসআই মামুনসহ সঙ্গীয় ফোর্স। এ সময় বাড়ি ঘর তল্লাশির নামে হয়রানি করে পরিবারের লোকজনকে। রাজুকে বাড়িতে না পেয়ে তার মা কে বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করে ওই পুলিশ কর্মকর্তা। এ সময় রাজুকে মারপিট করাসহ বিভিন্ন মামলায় ফাঁসাতে হুমকি ধামকিও দেন তিনি। এক পর্যায়ে রাজুর বাবা রাজ্জাক ড্রাইভার মেহেদী হাসানের মাধ্যমে ওই পুলিশ কর্মকর্তার দেয়া বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠানোর পর ঠান্ডা হন তিনি। ভুক্তভোগী নারী বলেন, শুক্রবার রাতে দামুড়হুদা মডেল থানার এএসআই মামুন ও একজন পুলিশ সদস্য আমার বাড়িতে এসে ছেলে রাজুকে খোঁজাখুঁজি করে। আমার ছেলে বাড়িতে নেই বললে ওই পুলিশ কর্মকর্তা আমার বাড়ির বিভিন্ন ঘরে প্রবেশ করে রাজুকে খুঁজতে থাকে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে আমার ছেলে এবং আমাকে। একপর্যায়ে আমি গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে আমাকেও বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় স্থানীয় প্রতিবেশীরা ছুটে আসলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা আমার ছেলেকে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায়। পরে আমার স্বামীর কাছে ফোন করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে পুলিশ কর্মকর্তা। আমার স্বামী ড্রাইভারি করার সুবাদে বাইরে থাকায় মেহেদী হাসানের মাধ্যমে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠালে তিনি ঠান্ডা হন। এ বিষয়ে দামুড়হুদার জয়রামপুর গ্রামের নিয়ামত মোল¬ার ছেলে মেহেদী হাসান বলেন, আমি রাজুর বাবার দেয়া এক হাজার টাকা এএসআই মামুনের নিজ ব্যবহৃত ০১৭০৬-৫৪৬৫৬৩ এই বিকাশ নাম্বারে পাঠালে তিনি আরও ৫০০ টাকা দাবি করেন। বিষয়টি আমি স্ব শরীরে থানায় গিয়ে ওসি স্যারকে জানিয়েছি। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য এএসআই মামুন বলেন, জয়রামপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির সাথে রাজু ও হাসানের মারামারি সংক্রান্ত একটি অভিযোগ তদন্তের জন্য শুক্রবার বিকেলে রাজুর বাড়িতে যায়। সেখানে তাকে না পেয়ে থানায় দেখা করতে বলি। পরে রাজু ও হাসান আমার সাথে দেখা করলে বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে কথা বলি। তিনি আরও বলেন, রাজুর বাড়িতে গিয়ে আমি কোনো প্রকার গালিগালাজ করিনি। আর টাকা নেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারবো না। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি মো. আলমগীর কবীর বলেন, বিষয়টি আমার জানাছিলো না তবে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। তার বিরুদ্ধে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। উল্লেখ্য, অভিযুক্ত ওই এএসআই মামুনের বিরুদ্ধে যেন অভিযোগের অন্ত নেই। সে স্থানীয় জনগণ যারা সেবা নিতে থানায় যান তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে থাকেন। এছাড়াও স্থানীয় সংবাদকর্মীদেরকে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন বলেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বিচার সালিসের নামে বাদী বিবাদীর কাছ থেকে আদায় করেন মোটা অঙ্কের অর্থ। শুধু কি তাই? সালিসে বসে বিবাদীকে মারপিট করার অভ্যেষও রয়েছে ওই পুলিশ কর্মকর্তার।