দামুড়হুদা অফিস: দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে ফসলি জমির মাটি কাটার ধুম পড়েছে। অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছেন। এতে বাদ পড়ছে না দুই-তিন ফসলি জমিও। হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি জমি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ১০০টি স্থানে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব। কেউ নগদ টাকা দিয়ে কেউ আবার রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে এই মাটি ব্যবসা করছেন। মাটি খেকোদের হাত থেকে বাদ পড়ছে না ভৈরব নদের পাড়ও। এদিকে পাশের এসব জমির মাটি কেটে নেয়ার পর পাশে থাকা জমি ভেঙে পড়ছে। বাধ্য হয়ে কৃষকরা তাদের ফসলি জমির মাটি বিক্রি করছেন। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর একাধিক কৃষকরা এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। ভূমিদস্যূরা সুচতুর হওয়ায় তাতেও কোনো সুফল মিলছে না।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক বলেন, দামুড়হুদা উপজেলা চিহ্নিত ভূমিদস্যূদের কাছে জমি না দিয়ে কোনো লাভ নেই। আশপাশের জমির মাটি কেটে ফেলা হচ্ছে। আমাদের জমি এমনিই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই বাধ্য হয়েই জমির মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে আমাদের। ভূমিদস্যূদের কাছে অনেকটাই অসহায় আমরা।
তারা আরও বলেন, ফসলি জমির মাটি কাটার কারণে দ্রুত জমির শ্রেণি পরিবর্তন হচ্ছে। যে জমিতে সারা বছর ধান লাগানো হতো, সেখানে এখন আর চাষাবাদ সম্ভব হচ্ছে না। সাধারণ মানুষের ঘরের উঠোন পর্যন্ত চলে গেছে ইটভাটায়। শুধু মহাসড়ক বা আঞ্চলিক সড়কের পাশেই নয়, হাসপাতাল ঘেঁষেও তৈরি হয়েছে ইটভাটা। এসব ভাটায় ইট তৈরির জন্য সরবরাহ করা হচ্ছে দুই ফসলি, তিন ফসলি জমির মাটি। এতে ক্রমাগত কমছে উপজেলায় আবাদি জমি পরিমাণ। জমির মাটিকাটার ফলে জমিতে বড় আকারের গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে চাষযোগ্য জমি।
সচেতনমহলের দাবি, যদি প্রশাসন কঠোরভাবে হস্তক্ষেপ করে তাহলে মাটিকাটা বন্ধ হয়ে যাবে। তাদের নাকের ডগার ওপর দিয়েই চলছে এ ব্যবসা। গ্রামীণ সড়কসহ আঞ্চলিক সড়কগুলোতে মাটি বহনকারী ট্রাক্টারের আবাদ চলাফেরার কারণে সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহন চালক, পথচারীরা ও কোমলমতি শিশুরা শব্দ দূষণসহ চোখেমুখে মাটি ও বালি ঢুকে গিয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছে।