দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার জয়রামপুরে রেলস্টেশন সংলগ্ন রেলের জমি থেকে রাতের আধারে মূল্যবান গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতা হুমায়ুন কবির ডাবলুর বিরুদ্ধে। রাতের আধারে চুরি করে কাটা শিশু গাছটির বর্তমান বাজার মূল্য আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা। রোববার দিবাগত গভীর রাতে গাছটি কাটা হয়েছে বলে প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। গাছ কাটার খবর পেয়ে রেল কর্তৃপক্ষ কেটে ফেলে রাখা গাছটি উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।
সরেজমিনে ঘটনা অনুসন্ধানে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের জয়রামপুর স্টেশনপাড়ায় আখ সেন্টারের পশ্চিম দিকে রেলের জমিতে একটি বিশাল আকৃতির মূল্যবান শিশু গাছ ছিলো। আনুমানিক দুমাস পূর্বে একইগ্রামের কলোনীপাড়ার আলী হোসেন গাছটি তার জমিতে আছে ভেবে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। বিক্রি করার পর ক্রেতা গাছটি কাটতে এলে দামুড়হুদা উপজেলা যুবদলের সদস্য জয়রামপুর গ্রামের রবির ছেলে হুমায়ুন কবির ডাবলু গাছটি কাটতে বাধা দেয়। খবর পেয়ে রেলের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে বলে গাছটি সম্পূর্ণ রেলের জায়গায় আছে তাই গাছটি কাটা যাবে না। কিন্তু গত রোববার দিবাগত রাতে গাছটি যুবদল নেতা ডাবলু তার লোকজন নিয়ে কেটে ফেলেন। সকালে কেটে ফেলা গাছের লগগুলো আখ সেন্টারের পাশে পাওয়া যায়। খবর পেয়ে রেল কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কেটে ফেলা গাছের লগগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে আলী হোসেন বলেন, রোববার রাতে ডাবলু তার ছেলেপুলে নিয়ে পিকনিক করেছে। তখন তার সাঙ্গুপাঙ্গরা গভীর রাতে গাছটি কেটে ফেলে। পরদিন সকালে গাছটি না দেখে খোঁজাখুঁজি করতে থাকি। এক পর্যায়ে আখ সেন্টার সংলগ্ন জনৈক ব্যক্তির বাড়ির পেছনে কাটা গাছটি পড়ে থাকতে দেখি। তিনি আরো বলেন, দুমাস আগে আমি গাছটি কাটতে গেলে ওই ডাবলু আমাকে বাধা দিয়েছিলো এবং রেলের লোকজন এসে বলেছিল এটা রেলের জায়গার গাছ, সরকারি গাছ, এটা কোনভাবেই কাটা যাবে না।
দামুড়হুদা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হুমায়ুন কবির ডাবলু বলেন, আমি গাছ কাটার সময় ছিলাম না। এ বিষয়ে কিছুই জানি না। সকালে গাছ কাটার বিষয়টি জানতে পেরে আমি নিজেই পুলিশ ও রেল কর্তৃপক্ষকে অবগত করি। গাছ কাটার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।
দামুড়হুদা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমান বাচ্চু বলেন, গাছ কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। ঘটনা সত্যি হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবদলের সভাপতি শরীফ-উর-জামান সিজার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। যদি তিনি এ বিষয়ে জড়িত থাকে তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে রেলের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জয়রামপুর রেল স্টেশনের অদূরে রেলের জায়গা থেকে একটি সরকারি শিশু গাছ কাটা হয়েছে। সংবাদ শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গাছটি উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। যেহেতু আমি সঠিকভাবে জানি না কে বা কারা গাছটি কেটেছে তাই অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হবে।