রতন বিশ্বাস: দামুড়হুদার চাঁদপুরে দিগন্ত জুড়ে শীতের সবজির সমারোহ। সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেক কৃষক। তাই এখানকার কৃষকরা অন্য চাষের পরিবর্তে সবজি চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। চাঁদপুরে বর্তমানে কৃষক বিকল্প ফসল হিসেবে বেছে নিয়েছে সবজি চাষ। এরই মধ্যে এখানে সবজি চাষের বিপ্লব ঘটিয়েছে অনেক কৃষক। আর শাক-সবজি চাষাবাদের জন্যই চাঁদপুর পরিচিতি লাভ করেছে। এখন এই গ্রামকে সবজি গ্রাম বলা হয়ে থাকে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয় এখানে চাষ করা শাক-সবজি। কৃষকরা সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, মুলাশাক, করলা, বেগুন, পেঁপে, বাধাকপি, ফুলকপি, আলু, পেয়াজ, রসুন, মিষ্টি কুমড়া, লাউ চাষ তুলনামূলক বেশিই হয়ে থাকে এ গ্রামে। এসব চাষ করেই দরিদ্রতা থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাবলম্বী হয়েছে অনেক পরিবার। তাই নিজের জমি না থাকলেও অন্যের জমি বর্গা নিয়ে হলেও শাক-সবজি চাষ করছে কৃষক। উপজেলা কৃষি বিভাগের লোকজন এরই মধ্যে কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করতে সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এখানকার মাঠে চাষ করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। সবজি চাষিরা জানান, তারা বরাবরই শাক-সবজি চাষ করে আসছেন। এতে তারা সফলও। তাদের মতামত, সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো যদি তাদের চাষকৃত শাক-সবজির উৎপাদন বাড়াতে আর একটু সতর্ক নজর রাখে তাহলে আরও সফল ও লাভবান হওয়া সম্ভব। আব্দুল কাদের নামে এক কৃষক জানান, কৃষক যখন দিশেহারা তখন বিকল্প উপায়ে সবজি চাষ বেছে নিয়েছে। আমরা এখন সবজি চাষ করে অনেক বেশি লাভবান হচ্ছি। আমাদের সবজি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রফতানি হচ্ছে। সফল কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, শাক-সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন গ্রামের কৃষক। আবার সবজির টাকায় অনেকের ছেলেমেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, কৃষি বিভাগ থেকে সবজি চাষের জন্য কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। এ অঞ্চলের সবজি বিভিন্ন দেশেও রফতানি হচ্ছে। করোনার কারনে বিদেশ থেকে পণ্য না আসায় দেশের উৎপাদিত সবজির দাম পাচ্ছে। ন্যায্যমূল্যে দাম পাচ্ছে কৃষকরা; যার ফলে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরী হচ্ছে। তবে মাঠে যাওয়ার রাস্তাগুলো যদি সংস্কার করা হতো তাহলে মাঠে সবজি নিয়ে আসার জন্য ট্রাক সরাসরি যেতে পারতো। দামুড়হুদা উপজেলার চাঁদপুর, হাতিভাঙ্গা, পাটাচোরা, সুবলপুরে সবজির চাষ বেশি। তবে মাঝে মধ্যে দুর্বৃত্তরা ফসল নষ্ট করছে রাতের আধারে। মাঠে পুলিশ ও কৃষি আদালতের ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তোজাম্মেল হোসেন জানান, এই এলাকায় মাঠ জুড়ে সবজি চাষ করেছেন কৃষকরা। আকাশচুম্বি দাম পাওয়াতে কৃষকরা সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছে। সবজির দাম পাওয়াতে কৃষকরা খুব খুশি। অন্য গ্রামের তুলনায় চাঁদপুর গ্রামে অনেক বেশি সবজি চাষ হচ্ছে।