তথ্য প্রযুক্তিকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে মেধাবিকাশে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান

চুয়াডাঙ্গায় ৮ম থেকে ১০ম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার ট্যাব বিতরণ

স্টাফ রিপোর্টার: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে দেশের নাগরিক সমাজকে স্মার্ট করে গড়ে তোলার সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদেরও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশেষ উপহার হিসেবে ইলেকট্রিক ডিভাইস ‘ট্যাব’ বিতরণ করা হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার সরকারি ও এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ সমমানের মাদরাসার ৮ম থেকে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব বিতরণকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম এ অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন, তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে মেধার বিকাশ ঘটানোর লক্ষ্যে সঠিকভাবে এ ট্যাব ব্যবহার করতে হবে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ট্যাব বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। শিক্ষা সম্প্রসারণে বছরের প্রথম দিনে যেমন শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক, তেমনই বিনামূল্যে ট্যাব বিতরণের কর্মসূচিও শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অবশ্যই সকল শিক্ষার্থীদের হাতে ট্যাব তুলে দেয়া সম্ভব হবে। তাবে এ জন্য প্রয়োজন লেখাপড়ায় মনোনিবেশ। সারাদেশে ৯ম ও ১০ম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে ট্যাব তুলে দেয়া হলেও বিশেষ উদ্যোগে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৮ম শ্রেণিকেও অন্তর্ভূক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে। শিক্ষার্থীদের সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন ছিলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর। জাতির জনকের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে ট্যাব বিতরণ বিশ্বে বিরল। এই ট্যাব সতর্কতার সাথে সঠিকভাবে ব্যবহার করে মেধা সমৃদ্ধকরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। এতে নিজের যেমেন উৎকর্ষতা বৃদ্ধি পাবে তেমনই জাতি পাবে মেধাবী প্রজন্ম। মেধাবীরা অধিষ্ঠিত হবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে।  অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস, জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান, পরিসংখ্যান বিভাগের উপপরিচালক শরিফুল ইসলাম, ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেন ও চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন। চুয়াডাঙ্গা উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেনের সঞ্চালনায় তিতুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান বক্তব্য রাখেন। এ সময়  সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিকাশ কুমার সাহা, চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিল আরা চৌধুরী, আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিলকিস জাহান এবং ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেবেকা সুলতানাসহ বিভিন্ন বিদ্যালয় ও মাদরাসার প্রধান শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সদর উপজেলার ৩২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৮টি মাদরাসার অষ্টম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১ম স্থান থেকে ৩য় স্থান অধিকারী মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে এ ট্যাব বিতরণ করা হয়। জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে বিতরণকৃত ট্যাবলেটসমূহ শিক্ষা সহায়ক উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে সরকারি ও এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং সমমানের মাদরাসায় অধ্যয়নরত মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২১ প্রকল্পের ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।  চুয়াডাঙ্গা জেলা ও সদর উপজেলা প্রশাসন এবং জেলা ও সদর উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয় চুয়াডাঙ্গা ট্যাবলেট বিতরণের আয়োজন করে।

এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিল আরা চৌধুরী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো জনশুমারী ও গৃহগণনা ২০২১ প্রকল্পের ট্যাবলেট প্রদান করেন। এসময় প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার্থীদের গুরুত্ব তুলে ধরেন। চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৮জন ছাত্রী বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো জনশুমারী ও গৃহগণনা ২০২১ প্রকল্পের ১৯জন শিক্ষার্থী ট্যাবলেট পেয়েছেন এর মধ্যে দিবা শিফটের নাফিজা হাদিকা জাহিন, নাফিজা হাদিকা জাহিন, ফারজানা খাতুন (দশম), জেবা তাহসিন ইরিনা, মাইশা রহমান, মাইমুনা খাতুন (নবম), মাইশা রহমান মিথি, রুকাইয়া আমিন, মোছা. হুমাইয়া জান্নাত হাফসা (অষ্টম) ও প্রভাতী শিফটের আয়েশা সিদ্দিকা, মোছা. মুবাশ্বিয়রা আক্তার, তাসনিম জোয়ার্দ্দার, তাজকিয়া উরবি (দশম), কারার তাফসিন, মেহেরিন জামান, জারিন তাসনিম (নবম) ও অষ্টম শ্রেণির মেহেজাবিন নবনী, মাহাবুবা ফেরদৌস ও সামাহা ইমতিয়াজ নোহা। প্রধান শিক্ষক দিল আরা চৌধুরী, সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুর রহমান, মো. মহসীন আলী ও মো. মতিয়ার রহমান।

Comments (0)
Add Comment