টানা তিনদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়

দাবদাহে পুড়ছে দেশের পাঁচ জেলা : গরম আরও বাড়বে

স্টাফ রিপোর্টার: মেঘবৃষ্টির লুকোচুরির দিন শেষ। সকাল থেকে খাঁ খাঁ রোদে যেন পুড়ছে শহর-জনপদ। চৈত্র তার রুদ্র মূর্তি নিয়ে হাজির হয়েছে। এরই মধ্যে চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের পাঁচটি জেলায় দাবদাহ শুরু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অধিদফতর গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশেরও সর্বোচ্চ। এটিই এ জেলার এ মরসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এছাড়া, রোববার থেকে টানা তিনদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত তিনদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙ্গাতে। গত রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সারাদেশের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এ সময় বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ ছিলো ৪৬ শতাংশ। হঠাৎ কালবৈশাখি ঝড় ছাড়া সাধারণ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আপাতত নেই। গরমের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে এবং এধারা আরও কিছুদিন থাকবে বলেও জানান তিনি। এদিকে, ঢাকায় এখনো দাবদাহ শুরু না হলেও গরমের তীব্রতা বেড়েছে। দেশের অন্য বড় শহরগুলোর অবস্থাও একই রকম। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ বুধবারও দিনভর প্রখর রোদ থাকতে পারে। বাড়তে পারে রাত ও দিনের তাপমাত্রা। দাবদাহ দেশের আরও কয়েকটি জেলায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের দুই একটি জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, আপাতত দেশের বেশির ভাগ এলাকা মেঘমুক্ত। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। তবে হঠাৎ কোথাও কোথাও বৃষ্টি হলেও তা বেশি সময় স্থায়ী হবে না। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, সাধারণত এপ্রিলে দেশের তাপমাত্রা বেশি থাকে। এ সময়ে সূর্যের আলো খাড়া পড়ে। মেঘ কম থাকে। বৃষ্টি হলেও তা দমকা হাওয়ার কারণে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। মে মাসে বৃষ্টি বেড়ে গিয়ে তাপমাত্রা আবার কমতে থাকে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজশাহীতে ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া পাবনার ঈশ্বরদী ও যশোরে ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ফরিদপুরে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর বাইরে দেশের আরও ১০টি জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি ছিলো। অর্থাৎ দাবদাহের কাছাকাছি তাপমাত্রা ছিলো। ঢাকায় গত সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর মঙ্গলবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উল্লেখ্য, তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে একে মৃদুু দাবদাহ বলা হয়। আর ৩৮ থেকে ৩৯ ডিগ্রি হলে মাঝারি এবং ৪০ ডিগ্রি বা এর বেশি হলে তীব্র দাবদাহ বলা হয়।

Comments (0)
Add Comment