স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদপ্রার্থীরা লাখ টাকা দিয়ে ভোটারদের মন জয় করেও পরাজিত হয়েছেন। এখন পরাজিত প্রার্থীরা জোট বেঁধেছেন টাকা ফেরত নিতে। এদিকে টাকা ফেরত না দেয়ার জন্য উল্টো জোট বেঁধেছেন মেম্বাররা (ভোটার)।
মেহেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে পরাজিত প্রার্থীরা হলেন মুজিবনগরে (১ নম্বর ওয়ার্ড) সোহেল রানা (সিলিং ফ্যান), মোমিনুল ইসলাম (অটোরিকশা) ও আলমাস শিলু (তালা) এবং গাংনীতে (৩ নম্বর ওয়ার্ড) উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সম্পাদক মজিরুল ইসলম (আটোরিকশা) ও হাফিজুর রহমান (তালা)। পরাজিত এই সদস্য প্রার্থীরা জোট বেঁধে লোকজন নিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের কাছে টাকা চেয়ে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ভোটারদের। অথচ তারা ভোটের কয়েক দিন আগে থেকে ভোটারদের সঙ্গে দেনদরবার করে উপহারের নামে প্রতিজনকে ১ লাখ টাকা করে দেন। ভোটে হারার পর পরাজিত প্রার্থীরা জোট বেঁধে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা চাওয়ায় বিষয়টি প্রকাশ পায়। তবে মেম্বাররাও টাকা না দেয়ার জন্য জোট বেঁধেছেন। কেউ কেউ বাড়িতে ১০-১২ জনের পাহারা বসিয়েছেন। গাংনী বামন্দী ইউপি চেয়ারম্যান কমল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ভোটে পরাজিত প্রার্থী মজিরুল ও হাফিজুর একটি মাইক্রোবাসে করে গাংনী উপজেলার চারটি ইউনিয়নে গিয়ে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলেন। টাকা না দিলে বড় ধরনের বিপদ হবে বলে তারা হুমকি দেন। মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার পালু শেখ বলেন, ‘আমার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সবার কাছে প্রকাশ্যে টাকা নিয়েছি। সবাইকেই বলেছি আমার স্ত্রী অসুস্থ, তার চিকিৎসার জন্য যিনি আমাকে টাকা দেবেন আমি তার টাকাই নেবো। এরপরও পরাজিত প্রার্থী সোহেল রানা ও আলমাস হোসেন শিলু গভীর রাতে ২০-২৫ জনের মোটরসাইকেল বাহিনী নিয়ে আমার বাড়িতে চড়াও হয়ে টাকা ফেরত দিতে হুমকি দিচ্ছেন। একই অভিযোগ করেন মুজিবনগর উপজেলার ইউপি সদস্য মোমিনুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ, আলাউদ্দিন ও রবিউল ইসলাম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সদস্য বলেন, ‘বাড়ির আশপাশের ১০-১২ জনকে সতর্ক থাকতে বলেছি। কেউ কোনো বাড়াবাড়ি করলেই তারা এসে যেনো প্রতিহত করেন।’ পরাজিত প্রার্থী সোহেল রানা ও আবু হাসান দুজনই ভোটারদের টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করেন। আবু হাসান বেশি কিছু বলতে না চাইলেও সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা টাকা দিয়েছি ভোট পাওয়ার জন্য। এখন হেরে গিয়েছি টাকা ফেরত তো নেবোই। ভোটাররা এখন টাকা ফেরত না দিয়ে টালবাহানা করছেন।’ গাংনীর মজিরুল ইসলাম ও হাফিজুর রহমান দুজন একই সুরে বলেন, এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। যারা এমন অভিযোগ করছেন তারা বিরোধীপক্ষ।