মহেশপুর প্রতিনিধি: হঠাৎ করেই ঝিনাইদহ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারত যাওয়ার ঘটনা বেড়েছে। প্রতিদিনই বাংলাদেশ থেকে অবৈধ পথে ভারতে প্রবেশ করছে অসংখ্য নারী-পুরুষ ও শিশু। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এ সীমান্ত দিয়ে ভারত যাওয়ার চেষ্টাকালে ৩৪৫জনকে আটক করেছে মহেশপুরের ৫৮ বিজিবি। মহেশপুর ৫৮ বিজিবির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে করোনাকালেও ভারতে প্রবেশের এই জনস্রোত কমছে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে মানব পাচারের নিরাপদ রুট তৈরি হয়েছে মহেশপুর সীমান্ত এলাকা।
বিজিবির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উপজেলার বাঘাডাঙ্গা, মাটিলা, সেজিয়া একাশিপাড়া, বাঁশবাড়িয়া, মকরধ্বজপুর, মাইলবাড়িয়া, দরবেশনগর, পদ্মপুকুর, খোশালপুর ও হাঠাৎপাড়া দিয়ে বিনা পাসপোর্টে ভারতে প্রবেশের সময় তাদেরকে আটক করা হয়। এরমধ্যে জানুয়ারিতে ৪৭, ফেব্রুয়ারিতে ১১১ ও মার্চে ৬৫জন রয়েছেন। তাদের সহযোগিতা করার অপরাধে প্রায় ৩৫ দালালকে আটক করা হয়। তবে সীমান্তে বসবাসকারীদের ভাষ্য, বিজিবির হাতে আটক হওয়াদের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ভারতে চলে গেছে। এ কাজে সহযোগিতা করে সীমান্তে গড়ে উঠা শক্তিশালী দালালচক্র। তবে, বিজিবির হাতে আটক হওয়ারা ভারতে প্রবেশের কারণ হিসেবে চিকিৎসার কথা বলছেন। সর্বশেষ গত ১১ এপ্রিল মহেশপুরের বাঘাডাঙ্গার কুমিল্লাপাড়া এলাকার একটি পেয়ারা বাগান থেকে দালাল নিজাম উদ্দীন ও খায়রুলসহ আটজনকে আটক করে বিজিবি। আটককৃকতদের বাড়ি বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ, যশোরের চাচড়া, নড়াইলের কালিয়া ও খুলনার ফুলতলায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারত থেকে বাংলাদেশের প্রবেশের সময় চার শতাধিক অনুপ্রবেশকারীকে আটক করে বিজিবি।যাদের অনেকে এখন ফিরে যাচ্ছে বলছেন সীমান্তে বসবাসকারীরা। সীমান্ত এলাকায় তথ্য নিয়ে জানা গেছে, মহেশপুর সীমান্তে পাচারের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নারী-পুরুষ মহেশপুর সীমান্তের বিভিন্ন নির্জন এলকায় জড়ো হয়। তারা দালালদের টাকা দিয়ে ভারতে যায়।
ঝিনাইদহে ভারতীয় সীমান্ত এলাকা রয়েছে ৫৭ কিলোমিটার। এরমধ্যে কাঁটাতার বিহীন এলাকা রয়েছে প্রায় ১১ কিলোমিটার। কাঁটাতার বিহীন এলাকা দিয়েই বেশি যাতাযাত হচ্ছে বলে বিজিবি ও পুলিশসূত্র জানিয়েছে।
মহেশপুর সীমান্তের মাটিলা গ্রামের নুরুন নবী নামে এক গ্রামবাসী জানান, সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে লোক আসে ভারত থেকে। অনেক সময় তারা সীমানা ক্রস করে বিভিন্ন বাড়িতে আশ্রয় নেয়। একইভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যায়। এরা মূলত এক শ্রেণির দালালদের মাধ্যমে পারাপার হয়ে থাকে।
মহেশপুর ৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান জানান, সম্প্রতি অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের ঘটনা বেড়েছে। তবে প্রতিটি সীমান্তে সার্বক্ষণিক কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি যেন কেউ অবৈধ সুযোগ কাজে লাগাতে না পারে।