ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: সারাদেশে চলছে সরকারের কঠোর লকডাউন। ঝিনাইদহে লকডাউনের জরিমানা আদায় করা হয়েছে মোট ১৬ লাখ টাকা। ‘জরিমানা করে আর পারছি না। মামলা লিখতে লিখতে হাত ব্যথা হয়ে গেছে। এখন মোটরসাইকেলসহ কোনো যাত্রী দেখলেই থানায় পাঠিয়ে দিচ্ছি’- এভাবেই কথা বলছিলেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সূবর্ণা রানী সাহা। গত শনিবার সকালে জেলার কালীগঞ্জ-কোটচাঁদপুর সড়কের রেলগেটে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় এ কথা বলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ঝিনাইদহে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। সকাল থেকে জেলা শহরসহ প্রতিটি উপজেলার মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে জরিমানা করা হচ্ছে। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে চলতি মাসের ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত করোনাকালীন লকডাউনে ৬৮৩ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মোট ১৬ লাখ এক হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করেছে প্রশাসন।
এদিকে রোববার সকাল ৭টার দিকে শহর ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। ঘর থেক বের হয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনছে মানুষ। স্বাভাবিক দিনের মতোই চলছে সব। সকাল ৯টার পর প্রশাসনের সদস্যরা রাস্তায় আসলে এলে লোকসমাগম কিছুটা কমে আসে। এরপরও সারাদিন বিভিন্ন গলিপথে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কেনাবেচা করছে ব্যবসায়ীরা। লকডাউনের পঞ্চম দিন রোববারও জেলা শহরে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ বিভাগ ও জেলা প্রশাসন। সকাল থেকেই শহরের আরাপপুর, পোস্ট অফিস মোড়, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়। শহরে চলাচলকারীদের তথ্য যাচাই করে শহরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। বিনা কারণে বের হলে করা হচ্ছে জরিমানা। এদিকে শনিবার শৈলকুপা উপজেলা শহরের কবিরপুর, চৌরাস্তা মোড়, হলমার্কেট, হাজী মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মানুষের চলাচল বেড়েছে। মুদি দোকান থেকে শুরু করে পোশাকের দোকানও খুলতে দেখা গেছে। শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমা লিজা বলেন, লকডাউনে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি। কিন্তু এতেও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেলিম রেজা জানান, জেলার ছয় উপজেলায় প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। নিয়মিত জরিমানাও করা হচ্ছে। কিন্তু মানুষকে সচেতন করা যাচ্ছে না।