ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: বিশ্ব মহামারি নোভেল করোনা ভাইরাসে ঝিনাইদহ জেলা শহরের এক নারীর প্রাণ কেড়েছে। সাহিদা রহমান নামের ৬৮ বছর বয়সী বৃদ্ধা বুধবার রাতে মারা যান। তিনি ঝিনাইদহ জেলা শহরের আরাপপুর সিটি কলেজপাড়ার একেএম রশিদুর রহমানের স্ত্রী।
জানা গেছে, ১৪ জুলাই থেকে জ্বর কাশি ঠান্ডায় ভুগছিলেন তিনি। বুধবার বিকেল ৫টার দিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তাকে। রাত ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ৩০তম মরদেহ হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন গঠিত দাফন কমিটির সদস্যরা জেলা শহরের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করে। এর আগে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয় তার। অপরদিকে বৃহস্পতিবার আক্রান্তের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে মর্মে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার প্রসেনজিৎ পার্থ এ খবর জানিয়েছেন। তিনি জানান, নমুনা প্রাপ্ত ১৫৩ জনের মধ্যে ৬৫ জনের ফলাফল পজিটিভ হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে আটক ই্উসুফ পারভেজ নামের এক হাজতি আসামি রয়েছেন। জেলা কারাগারের জেলার মো. আবুল বাশার জানান,ওই আসামিকে চলতি মাসের ১ তারিখে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। ২০ জুলাই তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কারাগারে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার বিষয়ে জেলার বলেন, অন্যসব কয়েদি ও হাজতি আসামিরা সুস্থ আছেন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হচ্ছে তাদের। এদিকে কালীগঞ্জ পৌরসভা এলাকার শ্রীরামপুর গ্রামের মো. নুর সোবহানের ছেলে সার ব্যবসায়ী মো. খালিদ স্বপন (৫৬) করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শামিমা শিরিন জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে গত ১৫ জুলাই কালীগঞ্জ থানাপাড়ার ঠিকানা উল্লেখ করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করান ওই ব্যক্তি। পরের দিন ১৬ জুলাই পজিটিভ ফল আসে তার। তিনি আরও জানান, ওই ব্যক্তি নমুনা দেয়ার পরে নারায়ণগঞ্জ চলে যান এবং সেখানে সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি হন। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে ১৯ জুলাই ফের নমুনা পরীক্ষা করান তিনি। পরের দিন অর্থাৎ ২০ জুলাই ফলাফল নেগেটিভ আসে তার। প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
অপরদিকে ইসলামী ফাউন্ডেশন ঝিনাইদহের উপ-পরিচালক জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির মৃত্যুর সঠিক তথ্য নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার কারণে দাফন কমিটির সদস্যরা বিপাকে পড়েছেন। মরদেহ দাফন কীভাবে হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকেন তারা। তবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। তিনি জানান, যেহেতু পরবর্তী নমুনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ, সেহেতু মরহুমের দাফন স্বাভাবিক নিয়মে হতে পারে। জানাজায় অংশ নিতে ঢাকা থেকে কালীগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বলেও জানান তিনি।