ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকে কেন্দ্র করে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত যুবক ফারুক হোসেন মারা গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে তার মৃত্যু হয়। আগে বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয় আ.লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন তিনি। নিহতের নাম ফারুক হোসেন ম-ল। তিনি জেলা শহরের খাজুরা গ্রামের গোলাম বারীর ম-লের ছেলে। ফারুক পেশায় একজন ফার্ণিচার মিস্ত্রি ছিলেন। আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কা বিরাজ করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের উপকণ্ঠে খাজুরা গ্রাম এক সময় বিএনপির ঘাটি ছিলো। টানা কয়েক বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সম্প্রতি জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে ৩৫-৪০ জনের একটি গ্রুপ বিএনপি ত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। গত মঙ্গলবার স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি লিটনের হাত ধরে সরকারি দলে যোগদান করেন তারা। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরেক নেতা আবন। এ নিয়ে বুধবার সন্ধ্যার দিকে গ্রামের স্কুল ঘরের কাছে বটতলায় দুইপক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫-২০ জন আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত ৭-৮ জনকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাতেই ফারুক হোসেন ম-লকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে মারা যান তিনি।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জীবন কুমার বিশ্বাস বলেন, সন্ত্রাসী এ ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে কিছুই জানা নেই তার। তবে এর পেছনে বড় ধরণের ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে বলে দাবি করেন তিনি। সংশ্লিষ্ট ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি তবিবর রহমান টুনা বলেন, এলাকায় আওয়ামী লীগের মধ্যে অসংখ্য গ্রুপ রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে চিহ্নিত বিএনপির লোকজন আওয়ামী লীগে যোগদানের জন্য চেষ্টা করে আসছিলো। হঠাৎ করে তাকে না জানিয়ে একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি লিটনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগদান করেছেন তারা। তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে অপর গ্রুপ আবনের নেতৃত্বে সংঘর্ষ এবং খুনের ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। নিহতের চাচা মনোয়ার হোসেন মঙ্গল বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।