জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার বাঁকা ব্রিকস ফিল্ড-আন্দুলবাড়ীয়া রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে মিনাজপুর মাঠপাড়ায় দ্ইু পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৪জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের এ ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা রেকর্ড করতে জামায়াতে ইসলামীর শতাধিক নেতাকর্মী থানা ঘেরাও করে। মামলা রেকর্ড হওয়ার পর তারা থানা ত্যাগ করে। মামলায় বিএনপির ২১জন নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপির পক্ষ হতেও ১০জনকে অভিযুক্ত করে পাল্টা আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলার মিনাজপুর মাঠপাড়ার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে আবু হানিফ তার লিখিত এজাহারে দাবি করে বলেছেন, বাঁকা ব্রিকস ফিল্ড-আন্দুলবাড়ীয়াগামী রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ব্রিটিশ আমলের এ রাস্তাটির মধ্যে তাদের মালিকনার জমি রয়েছে। তারা তাদের জমি ছেড়ে দিয়ে প্রকৃত স্থান দিয়ে রাস্তা নির্মাণের দাবি করে। এরপরও এ রাস্তা নির্মাণকালে আসামিগণ তাদের জমির ওপর দিয়ে জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণ করার পাঁয়তারা করছে। বুধবার সকালে তাদের জমির ওপর দিয়ে জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণ করার চেষ্টা করা হলে তিনিসহ বেশ কয়েকজন বাধা সৃষ্টি করে। এ নিয়ে একপর্যায়ে উভয়পক্ষ মারামারিতে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে আবু হানিফ ও তার ভাই হামিদুল ইসলাম এবং অপরপক্ষে বোরহান উদ্দিন ও ওয়াজেদ আলী ওরফে কাজি আহত হন। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সেনা ক্যাম্পের একটি টিমসহ জীবননগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর শতাধিক নেতাকর্মী আবু হানিফের পক্ষ নিয়ে থানা ঘেরাও করে এবং মামলা রেকর্ড করার পর থানা এলাকা ত্যাগ করে। মামলায় বিএনপির মুকুল হোসেনকে প্রধান আসামি করে ২১জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫জনকে আসামি করা হয়েছে। মুক্তারপুর গ্রামের বিএনপি নেতা জহুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে পাল্টা আরও একটি মামলা দায়ের করেছেন। রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখাকালে মামলাটি জমা দেয়া হয় বলে জানানো হয়।
এজাহারে প্রধান অভিযুক্ত বিএনপি নেতা জাহিদুর রহমান মুকুল জানান, ৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তাটি পুনঃনির্মাণের কাজ চলছে। বিট্রিশ আমলের রাস্তা এটি। রাস্তা নির্মাণকালে হানিফ ও তাফাজ্জেল রাস্তার এ জমি তাদের দাবি করে ৫০০ মিটারের মতো রাস্তা নির্মাণ বন্ধ করে দেয়। তারা দাবি করে এ রাস্তা এখন বিলের ভেতর দিয়ে হবে। সেভাবেই ম্যাপ হয়েছে। ১৮ ফুট চওড়ার এ রাস্তাটি পাথর দিয়ে ঢালাই করে নির্মাণ করা হচ্ছে। বাধা দেয়ার পর যে স্থান দিয়ে রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে সেখানে ঘর-বাড়ি ছিলো। গত ৫০ বছর ধরে বসবাসকারীদের সাথে পরামর্শ করার পর রাস্তা নির্মাণের স্বার্থে বসবাসকারীরা তাদের বাড়ি সরিয়ে নেন। কিন্তু তারপরও সেনা সদস্য হানিফ ও তাফাজ্জেল রাস্তা নির্মাণে বাধা দিলে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল সকালে ব্রিটিশ আমলের স্থান দিয়েই রাস্তা নির্মাণে ঠিকাদারকে সহযোগিতা করতে থাকে। এসময় আবু হানিফ ও তাফাজ্জেল হেঁসো নিয়ে হামলা করে বোরহানকে জখম করে। সেনা সদস্য হানিফ ঘটনা ঘটিয়ে চুয়াডাঙ্গা সেনা ক্যাম্পে গিয়ে অভিযোগ করেন। ঘটনাস্থলে আসে সেনাবাহিনীর একটি টিম। প্রকৃত ঘটনা দেখে টিমটি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বলে। ঘটনাটি দলীয় কোন বিষয় না হলেও জামায়াতে ইসলামী অহেতুকভাবে থানা ঘেরাও করে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। জীবননগর থানার ওসি মামুন হোসেন বিশ্বাস পরে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।