জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার মাধবপুর গ্রামে জোরপূর্বক গৃহবধূকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। রক্তাক্ত গৃহবধূকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। একই গ্রামের আশিক (২৮) নামক এক যুবক গতকাল সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার হাসাদাহ ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের এক সন্তানের জননীকে গতকাল দুপুর ২টার দিকে বাড়ির অদূরে কলাবাগানের মধ্যে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে যায়। এসময় ওই বাগানে একই গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে আশিক কাজ করছিল। জ¦ালানী সংগ্রহকালে ওই গৃহবধূকে কিছু কথা বলবে বলে ডেকে নিয়ে যায় এবং কু-প্রস্তাব দেয়। আর এই প্রস্তাবে রাজি না হলে আকস্মিকভাবে ওই গৃহবধূর তার বাম চোখের ওপর এবং মাথায় কিল ঘুষি মেরে তাকে আহত করে। এরপরও কু-প্রস্তাবে রাজি না হলে আশিক তার নিকট থাকা হেঁসো দিয়ে ওই গৃহবধূর গলার বাম পাশে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। অবস্থা বেগতিক দেখে আশিক দ্রুত পালিয়ে যায়।
আহত গৃহবধূর ননদ বলেন, দুপুরের দিকে আমরা বাড়িতে কাজ করছিলাম। তারপর দেখি আমার ভাবি জ্বালানি কাঠ আনতে দেরি করছে, এ অবস্থায় ভাবিকে খুঁজতে বের হই। এসময় দেখি আমার ভাবী কলাবাগানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। আমার আত্মচিৎকারে পার্শ^বর্তী লোকজন ছুটে আসে এবং আমার ভাবীকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়।
আহত গৃহবধূর বলেন, আমি কলাবাগানে জ্বালানি কাঠ আনতে যাই। এসময় আশিক ওই কলা বাগানে ছিলো। সে আমাকে ডাকে এবং কুপ্রস্তাব দেয়। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হলে সে এলোপাতাড়িভাবে আমার মুখে কিল ঘুষি মারতে থাকে। এরপরও আমি রাজি না হলে সে তার কাছে থাকা দেশীয় হেঁসো দিয়ে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আমার গলায় আঘাত করে আর এতে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাদিয়া বলেন, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আহত গৃহবধূকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। আমরা প্রাথমিকভাবে তার গলার বাম পাশে ক্ষত চিহ্ন দেখতে পাই। এছাড়াও তার মুখের বাম পাশে এবং মাথায় প্রচন্ডভাবে আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। এ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যশোর সদর হাসপাতালে রেফার করি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন হোসেন বিশ্বাস জানান, দুপুর তিনটার দিকে মুঠোফোনে গৃহবধূর এক আত্মীয় আমাকে এ ঘটনার ব্যাপারে ফোন করে। এরপর সাথে সাথে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুলিশ প্রেরণ করি। প্রাথমিকভাবে আমরা তার গলায় ক্ষতচিহ্নসহ মুখে এবং মাথায় প্রচন্ড আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। এছাড়াও এ পর্যন্ত ঘটনার ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করতে আসেনি। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।