দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণে নগদ অর্থ গ্রহণসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত
জীবননগর ব্যুরো: জীবননগরের বাঁকা ও হাসাদাহ ইউনিয়ন পরিষদের দুই চেয়ারম্যানসহ চার জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণে নিয়ম বহিরর্ভূতভাবে উপকারভোগীদের নিকট হতে নগদ অর্থ ও নির্মাণসামগ্রী নেয়ার অভিযোগ বাঁকা ও হাসাদাহ ইউপি চেয়ারম্যান এবং হাসাদাহ ইউপি সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া বাল্যবিয়ের সহযোগিতা করায় দামুড়হুদার হাউলী ইউপির এক সদস্যকে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ শাখা। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
সাময়িকভাবে বরখাস্তকৃত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা হলেন চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ ইউনিয়ন পরিষদের মো. রবিউল ইসলাম এবং একই উপজেলার বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের মো. আব্দুল কাদের প্রধান। সাময়িকভাবে বরখাস্তকৃত ইউপি সদস্যরা হলেন জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. সোহেল রানা শ্যামল এবং দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম। তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন। তাদের এ অপরাধমূলক কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করে। কাজেই স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(৪) ধারা অনুযায়ী তাদের স্বীয় পদ হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। একই সময় সাময়িকভাবে বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের পৃথক পৃথক কারণ দর্শানো নোটিশে কেনো তাদেরকে চূড়ান্তভাবে তাদের পদ থেকে অপসারণ করা হবে না তার জবাবপত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হয়।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুনিম লিংকন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বুধবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি আসে। সেখানে বলা হয় দুর্যোগ সহনীয় ঘর তৈরিতে আর্থিক লেনদেনসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে দুজন ইউপি চেয়ারম্যান ও একজন ইউপি সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এখন থেকে ওই দুটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে প্যানেল চেয়ারম্যানগণ দায়িত্ব পালন করবেন।
অপরদিকে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান বলেন, হাউলি ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বাল্যবিয়ে দেয়ায় সহযোগিতা করায় তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেয়া হয়। সাজার কারণে তাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদ্বয়ের মোবাইলফোন বন্ধ থাকায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।