স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় জেলার বিভিন্ন স্থানে ৬ মাস থেকে ১১ মাস পর্যন্ত শিশুদের নীল ও লাল রংয়ের ভিটামিনন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার এবার মোট এক লাখ ৪৫ হাজার ৮৪৫ জন শিশুদের এই ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গায় ৬ মাস থেকে ১১ মাস ও ১ থেকে ৫ বছরের সকল শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মোট ৯৬টি অস্থায়ী এবং স্থায়ী ৩ কেন্দ্র খোলা হয় এই ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুদের খাওয়ানোর জন্য। এখানে শিশুদের ক্যাপসুল খাওয়ানোর জন্য কর্মীর সংখ্যা ছিলেন ২৯০ জন। স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা এবার এক হাজার ৮১২ জন। প্রথম সারিরটি তত্ত্বাবধায়কে ছিলেন ১১৮ জন। এই কর্মসূচি চলে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা এলাকায় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করলেন চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের ৪৫টি কেন্দ্রে একযোগে এ ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল (লাল ও নীল) খাওয়ানো শুরু হয়। দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৪৫টি কেন্দ্রে ১২ হাজার ৮২৬ জন শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী ১ হাজার ৬৮০ শিশুকে নীল ক্যাপসুল এবং ১২মাস থেকে ৫৯ মাস পর্যন্ত বয়সী ১১হাজার ১৪৬ জন শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস লাল ক্যাপসুল খাওয়ানো হয় বলে নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার টিকা দান সুপারভাইজার আলী হোসেন ।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করলেন পৌরসভার মেয়র আতিয়ার রহমান হাবু। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাগেছে, দর্শনা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ২৮টি টিকাদান কেন্দ্রে ৬ মাস থেকে ১১মাস পর্যন্ত ৪৬৯ জন শিশুর ও ১বছর থেকে ৬ বছর পর্যন্ত ৩ হাজার ২৬৬ জন শিশুকে এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন দর্শনা কেরু এন্ড কোম্পানির শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি তৈয়ব আলী, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ও ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাবেক কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন নফর, পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান খালেকুজ্জামান, ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নেফাউর রহমান, পৌরসভার টিকাদান সুপারভাইজার আব্দুল মজিদ, দর্শনা রিক্সা-ভ্যান চালক ইউনিয়নের সভাপতি হবা জোয়ার্দারসহ এলাকার স্থানীয় ব্যাক্তি বর্গ উপস্থিত ছিলেন।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদায় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প¬াস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়। দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের আয়োজনে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প¬াস ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হেলেনা আক্তার। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় পুষ্টি সেবা, স্বাস্থ্য অধিদফতর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক হাসান আহমেদ, উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক কামাল উদ্দীন, উপজেলা এমটিইপিআই ফারুক আহমেদ, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আতিকুর রহমান, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম মিরাজ প্রমুখ। উলে¬খ্য, এবার দামুড়হুদা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ১৬৯টি কেন্দ্রে ৩০হাজার ৯৫৫জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প¬াস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২৩ এর আওতায় মেহেরপুর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি শিশুকে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মেহেরপুর পৌরসভা ও তিনটি উপজেলাকে ৫৪ টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করে একযোগে মোট ৪৭৫ টি কেন্দ্রের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলার সকল ৬-১১ মাস বয়সী ৮৪৩০ জন শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লাখ আইইউ) এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ৬১০৪৩ জন শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লাখ আইইউ) খাওয়ানো হয়েছে। ইতোপূর্বে গত ৬ ডিসেম্বর সিভিল সার্জন মেহেরপুরের সম্মেলন কক্ষে জেলায় কর্মরত সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিগণের সাথে অনুষ্ঠিত এক ওরিয়েন্টেশন সভায় সিভিল সার্জন ডা. মহী উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছিলেন মেহেরপুর জেলায় এবছর ৬৮ হাজার ৬৫৭ জন শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের আওতায় আনা হবে। সিভিল সার্জন ডা. মহী উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের আওতায় আনতে পেরেছি। আমাদের সকলের জন্য এটা আনন্দের একটি বিষয়। এবার জেলায় ৬-১১ মাস বয়সী ৮৪৯৭ জন শিশুকে টিকা খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও খাওয়ানো সম্ভব হয়েছে ৮৪৩০ জনকে। আর ১১-৫৯ মাস পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ৬০৯২৫ জন থাকলেত টিকা খাওয়ানে সম্ভব হয়েছে ৬১০৪৩ জনকে। ক্যাম্পেইনের সার্বিক তদারকি করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছিলো। ‘ এ সময় তিনি আরো বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুর অপুষ্টি, অন্ধত্ব প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত, হাম ও ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সব ধরনের মৃত্যুর হার হ্রাস করে।’