স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় আমন ধানে বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ ও রোগবালাইয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ধান চাষ করা বেশিরভাগ কৃষক পড়েছেন লোকসানের মুখে। অনেক কৃষক ইতিমধ্যেই তাদের ধানখেত নষ্ট করে অন্য ফসলের চাষ করেছেন। কারো কারো ধানখেতে ৩-৪ মণের বেশি ধান পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করতে কৃষকের খরচ হয়েছে প্রায় ১২-১৪ হাজার টাকা। বৃষ্টি কম হওয়ায় এ বছর কৃষকের খরচ আরও বেড়ে গেছে। বিঘাপ্রতি ১৬-১৮ মণ ধান হলে কৃষকের কিছুটা লাভ থাকার কথা। পোকার আক্রমণে ফলন কম হওয়ার আশঙ্কায় কৃষকের লাভের আশা একেবারেই নেই। পোকার আক্রমণের কারণে এ বছর বেশিরভাগ কৃষককে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।
কৃষকরা জানান, এ বছর মরসুমের শুরুতে ধানখেতে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। আরও পরে কারেন্ট পোকাসহ বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ ও রোগবালাইয়ে ধানখেত পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। ধানখেত বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন প্রকার প্রতিষেধক দিয়েও কৃষক তাদের খেত রক্ষা করতে পারেননি। কারেন্ট পোকার আক্রমণে রাতারাতি অনেক খেত নষ্ট হয়ে গেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেলগাছি গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ জিকু বলেন, ‘১৬ কাঠা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছিলাম। মাত্র দেড় মণ ধান হয়েছে। যা খরচ হয়েছে তা ঘরে ফিরে আসেনি।’
গতকাল রোববার কৃষক জিকুকে তার ক্ষেত থেকে বিচালি নিয়ে ভ্যানে করে যেতে দেখা গেল। এ সময় তিনি বলেন, ‘বিচালিও ভালো হয়নি। এটুকুই বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি গরুর খাবার হিসেবে।’
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ৩৫ হাজার ১৮৭ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে চাষ হয়েছে ৩৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে। পোকা দমনের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন পদ্ধতির বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে কৃষি বিভাগ।
তবে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা পোকার আক্রমণের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা কৃষকদের পাশে থেকেছি। সব ধরনের পরামর্শ দিয়েছি। কাক্সিক্ষত উৎপাদনে কোনো প্রভাব পড়বে না।’