স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় সর্দি কাশি জ¦রে আক্রান্ত রোগী চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে। কিছু মানুষ নমুনা দিয়ে করোনা পরীক্ষা করাতে এগিয়ে এলেও তাদের অনেকে প্রকৃত ঠিকানা দেয়ার ক্ষেত্রে লুকচুরি করছেন। মোবাইলফোন নাম্বার দেয়ার পর যখনই কোভিড-১৯ পজিটিভ বলে ম্যাসেজ পৌছুচ্ছে তখনই ওই নম্বরটি বন্ধ করে দিচ্ছেন কেউ কেউ। ফলে রোগীর অবস্থান শনাক্ত করে সেখানে লাল পতাকা লাগানো যেমন দূরহ হয়ে পড়ছে, তেমনই সরকারি সহযোগিতাও পৌছুনো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার একাধীক কাউন্সিলর।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও শহরতলী আলুকদিয়া ইউনিয়নে গত রোববার সকাল থেকে ৬টা থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। আজ তৃতীয় দিন। দ্বিতীয় দিনে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে লকডাউনের দৃশ্য ছিলো ঢিলে ঢালা। শহীদ হাসান চত্ত্বরসহ কিছু এলাকায় পুলিশি নজরদারি থাকলেও অধিকাংশ এলাকা ছিলো অনেকটাই অরক্ষিত। কিছু শিক্ষক নিজেদের বাড়িতে দলবেঁধে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট টিউশনি যেমন দিচ্ছেন, তেমনই শহরের বেশ কিছু কোচিং সেন্টারও চলছে বলে গতকালও সিনেমাহলপাড়া, কলেজপাড়াসহ বিভিন্ন মহল্লার সচেতনমহল জানিয়েছেন। সেলুনের দোকানগুলোর অধিকাংশই খোলা। তাছাড়া শহীদ হাসান চত্ত্বরের নিকট থানার অদূরের একটি চা দোকানেও উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়াও কলেজ রোড়ের বেশ কিছু চা দোকানি খোলা ছিলো। তবে মহল্লার আশে পাশে থাকা চা দোকানগুলোর বেশিরভাগই বন্ধ পাওয়া গেছে। অপরদিকে জেলা শহরের বিপনী বিতানগুলোর কিছু দোকানি দোকানের আশে পাশে অপেক্ষা করেছেন ক্রেতার জন্য। অবশ্য কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে এসব দোকানে ক্রেতার সংখ্যা খুব একটা পরিলক্ষিত হয়নি। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের যে ভবনে সবুজ জোন বলে চিহ্নিত করা হয়েছে সেখানেও সর্দি কাশি জ¦রে আক্রান্ত রোগীকে হরদম কাশতে দেখা গেছে। করোনা সংক্রমণের ঝুকির কথা জানিয়ে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম করা হচ্ছে না। তবে হাসপাতাল এলাকার ক্লিনিক নাসিং হোমে অপারেশন হচ্ছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গার অধিকাংশ মসজিদেই স্বাস্থ্য বিধি মেনে নামাজ আদায় করতে যেমন দেখা যায়নি, তেমনই মসুল্লিদের বেশিরভাগের মুখেই দেখা যায়নি মাস্ক।
এদিকে চুয়াডাঙ্গায় সর্দি কাশি জ¦রে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। যাদের শ^াসকষ্ট বাড়ছে তারাই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ছুটছেন। অনেকেই নিকটস্থ ফার্মেসি থেকে ওষুধ নিয়ে রোগী সুস্থ করার চেষ্টা করছেন। এ ধরণের রোগী যে পরিবারে, সেই পরিবারের অধিকাংশকেই জনসমাগম এলাকায় দেখা যাচ্ছে। এতে যেমন সংক্রমণের ঝুকিবাড়ছে, তেমনই বাড়ছে মৃতের হার। এর মাঝে অভিযোগ উঠেছে, যারা উপসর্গ নিয়ে নমুনা দিচ্ছেন করোনা পরীক্ষার জন্য, তাদের অনেকেই ঠিকানা দিচ্ছেন বিভ্রান্তকর। মোবাইলফোন নম্বর সঠিক দিলেও যখনই ওই নম্বরে করোনা পজিটিভ বার্তা যাচ্ছে তখনই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এতে রোগীর অবস্থান না পেয়ে পৌরসভার সেনেটারি ইন্সপেক্টর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। তাছাড়া বেশ ক’জন জনপ্রতিনিধি বলেছেন, আমাদের নিয়ে মহল্লাভিত্তিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির হাতে নাম ও ওই রোগীর দেয়া ঠিকানাসহ মোবাইল নম্বর দেয়া হচ্ছে। ওই নম্বর যেমন বন্ধ থাকছে, তেমনই যে ঠিকানা দেয়া হচ্ছে সেই ঠিকানায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না রোগীকে। ্এতেও সংক্রমণের ঝুুঁকি বাড়ছে।