স্টাফ রিপোর্টার: পুলিশ আসবে, পিটুনি দেবে তার পর নিরলজ্জের মতো দৌড়ে পালাবেন। এটা কি কোন সভ্যজাতির আচরণ? গতকালও চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে কয়েকটি স্থানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমান আদালত ও পুলিশি তৎপরতার দৃশ্য দেখে দূরে দাঁড়ানে সচেতন ব্যক্তি এরকমই প্রশ্ন তুললেন। বললেন, মানুষ গণহারে যখন সক্রমিত হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা যখন বেড়েই চলেছে তখনও মানুষ দায়িত্বশীল হচ্ছে না। অবাক হলেও সত্য যে, এক পাল্লা খোলা কিছু প্রসাধনীর দোকানেও নারী ক্রেতাদের দেখা যাচ্ছে। এই মহামারি মধ্যেও কেনো এতো সাজ সজ্জা? তাছাড়া কিছু যুবক রয়েছেন যারা অনেকটা বেপরওয়াভাবে ঘুরছেন। ওদের মধ্যে কেনো বিধি ভাঙার প্রবনতা? সঙ্গত প্রশ্নের জবাব মিলছে না।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা ও শহরতলী দৌলাতদিয়াড়সহ আলুকদিয়া ইউনিয়নে চলছে কঠোর লকডাউন। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত শুধুমাত্র কাচা বাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দোকান খোলা রাখার কথা। এছাড়া স্বাস্থ্য সেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য চলাচলের সুযোগ রাখা হয়েছে। জরুরী প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে বের হওয়া বারণ। বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে সামাজিক দূরুত্বও বজায় রাখতে হবে। অবাক হলেও সত্য যে, বাজারে শতভাগ স্বাস্থ্য বিধি যেমন মানা হচ্ছে না, তেমনই কিছু ব্যক্তি তাদের দোকানের পাশে ঘুর ঘুর করছেন ক্রেতার অপেক্ষায়। এসব বন্ধ করতে পুলিশি তৎপরতা যেমন বেড়েছে, তেমনই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও দিনে ও রাতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালন করছেন। গতকাল সোমবারও জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমান সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে সদর হাসপাতাল এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। এলাকার দুটি মসজিদের সামনে গিয়েও দাঁড়ান ভ্রাম্যমান আদালত। তিনি মসুল্লিদের সচেতন করে বলেন, সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করতে হবে। সকলের মাস্ক থাকতে হবে। হাসপাতাল থেকে ক্যানোলা নিয়ে বা রোগীরা যাতে এসব মসজিদে এসে সকলের সাথে মিশতে না পারে সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় যে সকল মসুল্লিদের মুখে মাস্ক ছিলো না তাদের মধ্যে মাস্ক বিতরন করেন চুয়াডাঙ্গা পৌর সভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামরুজ্জামান চাঁদ। তিনি পথচারিদের মধ্যেও মাস্ক বিতরণ করেন এবং করোনা থেকে নিজেকে এবং অন্যক্ষে রক্ষার্থে দায়িত্বশীল হওয়ার পুনঃ পুনঃ অনুরোধ জানান।
গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের পৃথক স্থানে ৯টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। এসব আদালতে ৪৯টি মামলা রুজু হয়। এসব মামলায় ৫৪ জনকে ৩৩ হাজার ২শ ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে। তা অব্যাহত থাকবে। ভ্রাম্যমান আদালত শুধু জরিমনা নয়, একই ব্যাক্তি একাধীকবার একই অপরাধ করলে তাকে কারাদ- পর্যন্ত ভোগ করতে হবে পারে। এদিকে গতকাল স্টেশন এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে জনসমাবেশ দেখে পুলিশ ফোর্স শক্ত অবস্থান নেয়। লাঠিপেটাও করেছে বেশ ক’জনকে। পুলিশ দেখে দৌড়ে পালনো দেখে অনেকেই বলেছেন, এসব মানুষের বিবেক জাগবে কবে?