চুয়াডাঙ্গাসহ ৭ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ : শীত বেড়ে যাওয়ার পূর্বাভাস

বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ অব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার: দেশের ৭টি জেলার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল রোববার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
পূর্বাভাসে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সেই সঙ্গে রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও মৌলভীবাজার জেলাসহ বাঘাবাড়ী অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়াও দেশের দক্ষিণাঞ্চলের রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। এছাড়া ৫দিনের প্রথম দিকে দেশের উত্তর-পূর্ব দিকে বৃষ্টির প্রবণতা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এদিকে, মাঘের মাঝামাঝিতে চুয়াডাঙ্গায় একদিনে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছে। গত ১৬ দিনে এ জেলার তাপমাত্রা ৯ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা নামা করেছে। প্রতিদিন রাত থেকে বয়ে যাওয়া হিমেল হাওয়ায় কন কনে শীত অনুভূত হচ্ছে। সকালে কিছুটা কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া বিরাজ করলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রৌদ্রময় আবহাওয়া দেখা দিচ্ছে। তবে হিমেল হাওয়ায় হাঁড় কাঁপানো শীতে স্বাভাবিক কর্মজীবনে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, রোববার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৩ শতাংশ। এদিন সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৫ শতাংশ। তিনি আরো জানান, গত ১১ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৬ শতাংশ, ১২ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৫ শতাংশ, ১৩ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৪ শতাংশ, ১৪ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৪ শতাংশ, ১৫ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৫ শতাংশ, ১৬ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৮৯ শতাংশ, ১৭ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৪ শতাংশ, ১৮ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৭ শতাংশ, ১৯ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯১ শতাংশ,২০ জানুয়ারি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিলো এবং এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯১ শতাংশ, ২১ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৫ শতাংশ, ২২ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সে সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৭ শতাংশ, ২৩ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৯ শতাংশ, ২৪ জানুয়ারী সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৭ শতাংশ, ২৫ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১২ দশমিক ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৪ শতাংশ। এ জেলায় তাপমাত্রা আরো কমার সম্ভবনা রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। গত ৩দিন সকালে সূর্যের দেখা মেলেনি। দুপুরের পর সূর্যের দেখা মেলে। এ জেলার তাপমাত্রা ক্রমাগত কমতে থাকায় মানুষের কর্মজীবনে স্থবিরতা বিরাজ করছে। সকাল থেকেই মানুষ তাদের কাজকর্ম শুরু করতে পারছেনা। দুপুর থেকে মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হচ্ছে। দিন মজুররা সব চেয়ে বেশি সমস্যায় রয়েছে। শীতে তারা অনেকটাই কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের উদ্যোগে ৪০০ জন অসহায় শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা চেম্বার ভবনে এই শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদ শরীফুজ্জামান শরীফ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. ইয়াকুব হোসেন মালিক, সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহারিন হক মালিক, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম পিটু, সহ-সভাপতি সালাউদ্দীন মিঠু, সালাউদ্দিন মুর্তজা, আরিফ হোসেন জোয়ার্দার সোনা, সেলিম উদ্দিন আহমেদ এবং জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম।