স্টাফ রিপোর্টার: মাঘ মাসের শেষ প্রান্তে এসে চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের ছয় জেলার উপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়ার অধিদপ্তরের এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এ পরিস্থিতি রোববারও অব্যাহত থাকতে পরে। গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে ৮ দশিমক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও রাজশাহীতে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি, পাবনার ঈশ্বরদীতে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি, দিনাজপুর ও নওগার বাদলগাছীতে ১০ ডিগ্রি, তেতুলিয়ায় ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সৈয়দপুর ও রাজারহাটে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
চলতি মৌসুমে শ্রীমঙ্গলে এ পর্যন্ত এটিই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, মৌলভীবাজার এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
এ অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, মৌলভীবাজার এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশে হালকা থেকে মাঝারী ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এ ছাড়া সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশে হালকা থেকে মাঝারী ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
এদিকে, মৃদু শৈত্য প্রবাহে মাঘের শেষে শীতে কাঁপছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় হাঁড় কাঁপানো শীত। দু’দিনে তাপমাত্রার পারদ নেমেছে ১০ ডিগ্রির নিচে। এতে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। সকালে তীব্র শীতে কাজে বের হতে কষ্ট হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষের। গতকাল শনিবার এ জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মৃদ্যু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এ জেলার উপর দিয়ে। এর আগে সকাল ৬ টায় চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত শুক্রবার ছিল ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বৃহস্পতিবার ছিল ১৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হিমেল হাওয়ায় কন কনে শীত অনুভূত হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রৌদ্রময় আবহাওয়া দেখা দিচ্ছে। হিমেল হাওয়ায় তীব্র শীত অনুভুত হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে, যা ২-৩ দিন অব্যাহত থাকতে পারে। গ্রাম থেকে শহরে মুরগি বিক্রি করতে আসা কাশের আলী বলেন, ভোরে বাইসাইকেল নিয়ে শহরে এসে হাঁস-মুরগি বিক্রি করি। বেলা ১১টার মধ্যে বাড়ি ফিরে যাই। গত কয়েকদিন শীত কম ছিল। কিন্তু দুদিনে শীত এত বাড়ছে যে বেশিরভাগ মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।
গত দু’দিন ধরে রাস্তাঘাটে লোকজনের চলাচল অনেকটাই কমে গেছে। শীতের তীব্রতায় জীবন-জীবিকার তাগিদে বের হওয়া মানুষও কষ্ট পাচ্ছে। বিশেষত ছিন্নমূল মানুষ এবং কর্মসংস্থানের সন্ধানে বের হওয়া দিনমজুরদের জন্য পরিস্থিতি অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
পল্লী চিকিৎসক মিজানুর রহমান জানান, মাঘে শীত তেমন ছিলো না। গত দুদিন কনকনে শীত। সকালে বের হতে দেরী হচ্ছে। রোগীরা বসে আছে তাই সকাল বেলায় বের হচ্ছি। শীতে কষ্টে হচ্ছে।
কাঠ ব্যবসায়ী জামাত আলী বলেন, গাছ কেটে স মিলে নিতে হবে। সকাল বেলা শীতে কাবু হওয়ার দশা। কাজ শুরু করতে বেলা হয়ে যাচ্ছে। তবে সকাল বেলায় রোদ আছে। একটু ভাল লাগছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক কর্মকর্তা রকিবুল হাসান জানান, আজ থেকে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এ অঞ্চলে। আগামী দু’দিন তাপমাত্রার পারদ আরো কমতে পারে। তবে দিনে রোদ থাকবে। রাতে শীত অনুভুত হবে।