চুয়াডাঙ্গার হিজলগাড়ী বাজারে একাধিক বিসিআইসি’র সার ডিলার 

বেগমপুর ইউনিয়ন ডিলার শূন্য হওয়ায় ভোগান্তিতে চাষিকুল

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হিজলগাড়ী বাজারে নীতিমালা বহির্ভূতভাবে গড়ে উঠেছে একাধিক বিসিআইসি’র সারের ডিলারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নীতিমালা অনুযায়ী ডিরারশিপ পেতে আদালতে মামলা ও জেলা প্রশাসকের নিকট করা হয়েছে অভিযোগ। ফলে বেগমপুর ইউনিয়ন ডিলার শূন্য হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে চাষিকুল। জেলা সার বীজ মনিটরিং কমিটির নিকট শূন্য ইউনিয়নে ডিলার নিয়োগ জোর দাবি জানিয়েছে বেগমপুর ইউনিয়নবাসী।

প্রাপ্ততথ্য ও নীতিমালা অনুযায়ী জানা যায়, ২০০০ সালে বিসিআইসি সারের ডিলার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন মেসার্স আকবার আলী। ২০০৭ সালে উপজেলা সার বীজ মনিটরিং কমিটি নির্দেশ দেন বেগমপুর ইউনিয়নের বরাদ্দকৃত ডিলারশিপ ইউনিয়ন এলাকায় অবস্থান করতে হবে। সে নির্দেশনা মোতাবেক মেসার্স আকবার আলী বেগমপুর ইউনিয়নের হিজলগাড়ী বাজারটি ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান হওয়ায় তিনি এখানে স্থায়ীভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ ১৮ বছর হিজলগাড়ী বাজারে নিয়ম মেনে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। ২০১৯ সালে বেগমপুর ইউনিয়ন বিভক্ত করে নবগঠিত নেহালপুর ইউনিয়ন সৃষ্টি হয়। সঙ্গত কারণে হিজলগাড়ী বাজারটি নেহালপুর ইউনিয়নের মধ্যে পড়ে যায়। যার কারণে বেগমপুর ইউনিয়ন ডিলার শূন্য হয়ে পড়ে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শূন্য ইউনিয়নে ডিলার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিসিআইসি সার ডিলার নীতিমালা ২০০৯ এর আলোকে বিদ্যমান ডিলারের অবস্থান অনুযায়ী ডিলারশিপ নবায়ন ও সমন্বয় করে কোন ইউনিয়ন ডিলার শূন্য হলে সে ইউনিয়নে নতুন ডিলার নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ২০১৯ সালে নীতিমালা বহির্ভূতভাবে নেহালপুর ইউনিয়নে ডিলার থাকা সত্বেও বিবিএস এ্যাগ্রোর মালিক সুমন আলীকে নেহালপুর ইউনিয়নের ডিলারশিপ প্রদান করা হয়।

২০২৩ সালে সুমন আলীর মৃত্যুর কারণে মালিকানা পরিবর্তন করে তার স্ত্রীর নামে প্রদান করা হয়। বেগমপুর ইউনিয়নের রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের খেদের আলী, পারঘাটা গ্রামের আলী কদর, যদুপুর গ্রামের আরজ আলী, উজলপুর গ্রামের শফি উদ্দিন, ফুরশেদপুর গ্রামের আজিজুল, হরিশপুর গ্রামের জমির আলী বলেন, মেসার্স আকবার আলী বেগমপুর ইউনিয়নের ডিলার হলেও ইউনিয়ন বিভক্ত হয়ে যাওয়ায় তার প্রতিষ্ঠানটি নবগঠিত নেহালপুর ইউনিয়নের আওতায় গেছে। যার কারণে আমাদের বেগমপুর ইউনিয়নটি ডিলার শূন্য হয়ে পড়েছে। সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত নীতিমালা-২০০৯ এর (অনুচ্ছেদ ১৫., ১৫.২.৯) বলা আছে একটি ইউনিয়নে একজন ডিলার নিয়োজিত থাকবে। নীতিমালার আলোকে বিদ্যামান সার ডিলারদের ডিলারশিপ নবায়ন ও সমন্বয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুরাতন ডিলারদের ইউনিয়নে সমন্বয়ের পরও যদি কোন ইউনিয়ন শূন্য থাকে সে ক্ষেত্রে নতুন ডিলার নিয়োগ কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে এবং নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে শূন্য ইউনিয়নের বিপরীতে একজন করে ডিলার নিয়োগ করা হবে। নীতিমালার ব্যতয় ঘটায় মেসার্স আকবর আলী জেলা প্রশাসক ও সভাপতি জেলা সার বীজ মনিটরিং কমিটির নিকট আবেদন করার পাশাপাশি মেসার্স বিবিএস এগ্রোর প্রাপাইটারের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

সূত্রে জানা গেছে, জেলা সার বীজ মনিটরিং কমিটির একটি সভায় জেলা প্রশাসক প্রকাশ্যে বলেন, ২০১৯ সালে নীতিমালা মেনে বিবিএস এ্যাগ্রোকে ডিলারশিপ দেয়া হয়নি। এখন সমন্বয় করে তারা যদি বেগমপুর ইউনিয়নে না যায় তাহলে ডিলারশিপ বাতিল করা ছাড়া উপায় নেই। বিষয়টি জেলা সার বীজ মনিটরিং কমিটি নীতিমালা অনুযায়ী সমাধান পূর্বক বেগমপুর ইউনিয়নের ডিলার নিয়োগ দেন তার জোরদাবি জানিয়েছে ইউনিয়নবাসী। এ ব্যপারে বিবিএস এ্যাগ্রোর ডিলারশীপ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।