চুয়াডাঙ্গার হিজলগাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ক্লোজড : তদন্ত কমিটি গঠন

স্টাফ রিপোর্টার : চুয়াডাঙ্গার হিজলগাড়ী ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই শেখ রকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থবাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের সত্যতা মেলায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। এদিকে রকিবুল ইসলামের ক্লোজডের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ের বিভিন্ন কর্মকা- নিয়ে বইছে আলোচনা সমালোচনা। সেই সাথে অভিযুক্ত এসআই রকিবুল ইসলামকে হিজলগাড়ী ক্যাম্প থেকে ক্লোজড করায় এলাকাবাসী চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের নেহালপুর স্কুলপাড়ায় কালুর বাড়িতে গত শুক্রবার ঢাকা ধামরাইয়ের মধুডাঙ্গা থেকে পিকাপভ্যানে করে ৪ জন ব্যক্তি বেড়াতে আসেন। শুক্রবার দিনগত রাত ৩টার দিকে হিজলগাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই শেখ রকিবুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স আরআরএফ’র কনেস্টেবল ওয়াসিম ও সজিবকে সাথে করে নিয়ে গিয়ে সন্দেজনকভাবে ৪জনকে আটক করেন এবং পিকাপভ্যানসহ তাদেরকে ক্যাম্পে নিয়ে ১৩ ঘণ্টা কাস্টরিতে আটকিয়ে রাখেন। অভিযোগ উঠেছে আটককৃত ৪ জনকে ছাড়াতে সুকৌশলে ৯৫ হাজার টাকা অর্থবাণিজ্য করেছেন তিনি। আর এ অর্থ লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নেহালপুর গ্রামের ওয়াজেদের ছেলে সাইফুল ইসলাম। বিষয়টি অতিগোপনে করা হলেও তা জানাজানি হয়ে পড়ে। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের দৃষ্টিগোচরে আসে। এসআই রকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় গতকাল সোমবার তাকে হিজলগাড়ী পুলিশ ক্যাম্প থেকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করেন বলে পুলিশের একাধিক সূত্রে জানাগেছে। অপরদিকে পুলিশের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, আটককৃতদের ছেড়ে দেবার সময় বেশকিছু সাদাকাগজে অনেকের স্বাক্ষর করে রাখা হয়। রোববার গভীর রাতে তিনি সেগুলো অফিসে বসে নিজেকে রক্ষা করার জন্য নিজের মত করে লেখালেখি করেন। এদিকে নামপ্রকাশ না করার শর্তে এলাকার অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, হিজলগাড়ী ক্যাম্পের ভেতর বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মানুষের বসার জন্য একটি গোলঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন। অথচ রকিবুল ইসলাম এই গোলঘর নির্মানের অজুহাতে গণহারে মানুষের নিকট থেকে অনুদান হিসেবে অর্থ আদায় করেছেন। যা রীতিমত অনেকের মনে কষ্ট দিয়েছে। যা নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা অব্যাহত আছে। অনেকেই মন্তব্য করে বলেছেন, গোল ঘর নির্মাণ করার কথা বলে মানুষের নিকট থেকে যে টাকা আদায় করা হয়েছে তা অমানবিক। যার হিসাব তিনি ছাড়া আর কেউ জানে না। এদিকে ঘটনার পর থেকে মধ্যস্থতাকারী নেহালপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম এসআই রকিবুলের নির্দেশে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছে। সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সঠিক তথ্য জানা যাবে টাকা কার পকেটে কত গেছে। তার সাথে কোনোভাবেই যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে হিজলগাড়ী ক্যাম্প থেকে আলোচিত ক্যাম্প ইনচার্জকে প্রত্যাহার করে নেয়ায় চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গার সুযোগ্য পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, এসআই রকিবুল ইসলামকে ক্যাম্প থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।