বেগমপুর প্রতিনিধি: টাকার জন্যই অপহরণ করা হয় চুয়াডাঙ্গার যদুপুুর গ্রামের প্রবাসীর ছেলে শাকিবকে। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় তাকে। নৃশংস হত্যাকা-ের সাথে জড়িত গ্রেফতারকৃত চারজনকেই আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, ময়নাতদন্ত শেষে শাকিবের লাশ বিকেল ৪টার দিকে গ্রামে নেয়া হলে গ্রামজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। জানাজায় অংশগ্রহণকারীরা ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, টাকার জনই শাকিবকে অপহরণ করা হলে অপহরণের পরপরই কেন হত্যা করা হলো? পুলিশ আসামিদের রিমা-ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হয়তো ভিন্ন উত্তরও মিলতে পারে বলে সচেতন মহল মনে করছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দর্শনা থানাধীন বেগমপুর ইউনিয়নের যদুপুর গ্রামের মাঠপাড়ার সৌদিআরব প্রবাসী আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে শাকিব হোসেন ওরফে শাকিল আহম্মেদকে ১৯ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে কৌশলে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখা হয়। এ ঘটনায় শাকিবের পরিবার দর্শনা থানায় ডায়রি করলে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে কুষ্টিয়া মিরপুরের কমিরহাট কেনালপাড়ার কুদ্দুস ম-লের ছেলে রাজিব ম-ল (২৪), যদুপুর গ্রামের আকরাম বকাউলের ছেলে সিদ্দিকুর রহমান (৪২), যশোর শার্শা উলাশি গ্রামের ঈমন আলীর ছেলে আকাশ (২৫) ও ওমর আলীর ছেলে সোয়েবকে (১৯) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তিতে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে যদুপুর গ্রামের মোল্লাবাড়ির পেছনের আম বাগানের মধ্যে আমপাতার নিচে লুকিয়ে রাখা শাকিবের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল রোববার ময়না তদন্ত শেষে শাকিবের মরদেহ বিকাল ৪টার দিকে গ্রামে পৌঁছুলে গ্রামজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। মাগরিবের আগে নামাজে জানাজা শেষে গ্রাম্য কবরস্থানে লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়।
দর্শনা থানার ওসি মাহাব্বুর রহমান কাজল বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী কুষ্টিয়ার রাজিব জানিয়েছে সে ধার দেনার কারণে নিজ এলাকায় ফেরারী। ধার দেনা শোধ করতে প্রবাসীর ছেলে শাকিবকে অপহরণ করে এবং মুক্তিপণের জন্য ৫ লাখ টাকা দাবি করে। মূলত টাকার জন্যই এ অপহরণ। এদিকে শাকিবের নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণকারীরা ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, টাকার জন্য যদি অপহরণ করা হয় তাহলে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে তাকে হত্যা করবে কেন? মুক্তিপণের টাকা নিতে হলে অপহরকের সাথে পরিবারের কথোপোকথন, ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা জোগাড় করানো, ঠিকানা মতো টাকা পৌছানোর বিষয়গুলো থেকেই যায়। আর ঘুমের বড়িগুলো কেনা হলো কোন দোকান থেকে? আর কে-ই বা কোমল পানির সাথে মিশালো ঘুমের বড়ি? মুক্তিপণের জন্য একটি নাবালক কিশোরকে অপহরণ পূর্বক পরিকল্পনা করে হত্যার বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সচেতন মহলের মাঝে। পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। সঠিক তদন্তপূর্বক শাকিব হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে গ্রামবাসী।