গড়াইটুপি প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের গহেরপুর পাকশি’র বিল নিয়ে উত্তেজনা দানা বেধেছে। ইজারা পাওয়ার লক্ষ্যে যে ৩টি মৎস্যজীবী সমিতি দরপত্র দাখিল করেছে তাদের মধ্যেই বিরোধ চরমে পৌঁছেছে। ফলে বড় ধরনের সংঘর্ষেরও আশঙ্কা করছে স্থানীয়দের অনেকে।
জানা গেছে, দর্শনা থানাধীন গড়াইটুপি ইউনিয়নের গহেরপুর পাকশি’র বিল টানা ৬ বছর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় মৎস্যজীবী সম্প্রদায় লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে। ইজারার মেয়াদ পূর্ণ হলে গত বছর অক্টোবর দরপত্র আহ্বান করা হয়। গহেরপুর মৎসজীবী সমিতি, সততা মৎস্যজীবী সমিতি ও সড়াবাড়িয়া সুজায়েতপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি নামের তিনটি সমিতি দরপত্র দাখিল করে। গহেরপুর মৎস্যজীবী সমিতির অনুকূলে ইজারা প্রদানের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। এরই এক পর্যায়ে ৮৬ দশমিক ২৪ একরের পাকশি বিলটি ইজারা নেয়ার আশায় দরপত্র দাখিলকারী অপর দরপত্র দাখিলকারিরা আদালতে রিট করে ইজারা প্রদানের কার্যক্রম স্থগিতাদেশ চায়। বিজ্ঞ আদালত স্থগিতাদেশ দিয়েছে। ফলে বিলে যাওয়ার সুযোগ নেই কারো। গতপরশু বুধবার দিনগত রাতেও পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ উঠেছে। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে আশাদুল হক ও তার লোকজনের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন বিলের গ্রামপুলিশ ও নাইটগার্ড আমাদের ধাওয়া করে। তারা একটি ধারালো অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়। অপরদিকে গ্রাম পুলিশ ও নাইটগার্ড জানান আমরা ৪-৫ জন বিল পাহারা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ আশাদুল ও তার লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা প্রাণে বাঁচার জন্য পালিয়ে। কারণ প্রায় ১শ লোকের কাছে আমরা ৪-৫ জন সামান্য মাত্র। এ বিষয়ে দর্শনা থানায় দুপক্ষ পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
গহেরপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি রহিত চন্দ মাঝি বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান একটি সমিতির পক্ষে কাজ করছেন। আমরা কারো কাথায় বিল ছাড়বো না। ডিসি মহোদয় বা ইউএনও স্যার আমাদের নির্দেশ দিলে বিল থেকে সরে আসবো। জীবন থাকতে তার আগে আসবো না। এ বিষয়ে সততা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি হালিম হোসেন কোন প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ বিষয়ে স্থানীয় গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজু বলেন, আমি বিলের কোনো ইজারাদার নয়। এমনকি কোনো সমিতির সদস্য নয়। কারো পক্ষ হয়ে কাজ করছি এটাও সঠিক নয়। বিলটি যেহেতু আদালতের নির্দেশে স্টে হয়ে গেছে; সেহেতু একজন চেয়ারম্যান হিসেবে বা প্রতিনিধি হয়ে আমি বিলটির দেখভাল করছি। এখানে আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাকে ও আমার ইউএনও স্যারকে গালিগালাজ শুনতে হচ্ছে। যেটা কোনো সভ্য সমাজের কাম্য নয়। তাদের হুমকি ধামকি দেয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। সরকার বাহাদুর বিলটি যাকে ইজারা দিবে আমরা তাকেই বিলটির দখল বুঝিয়ে দেবো। ইজারা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের পরিষদের দেখভাল করবো। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শামীম ভূইয়া দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে জানান, বিলটি সরকার গহেরপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে দিয়েছিলেন। পরে অন্য দুটি ইজারাদার চ্যালেঞ্জ করে আদালতের স্টে অর্ডার নিয়ে এসেছে। এখন আপাতত বিলটিতে ৩টি সমিতির কাউকে যাওয়ার অনুমতি নেই। আমরা সার্বিক দিক বিবেচনা করে মহামান্য আদালতের নির্দেশসহ বিশদ বিষয় নিয়ে আগামীকাল (আজ) বসব। ততক্ষণ বিল সরকারের অনুকূলে থাকবে।