কাল ভোট : কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখার আশ্বাস প্রশাসনের
নজরুল ইসলাম: চুয়াডাঙ্গার নবগঠিত গড়াইটুপি ইউপি নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা রোববার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরণের নিরাপত্তার ব্যবস্থার করা হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। নির্ভয়ে ভোটাররা যেনো ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে তার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, ম্যাজিস্ট্রেট, আনছার সদস্য, নিয়োগ দেবার কথাও বলা হয়েছে। সুষ্ঠু ও নিরেপেক্ষ ভোটগ্রহণ করার লক্ষ্যেই এতোসব আয়োজনের ব্যবস্থা। প্রশাসন আন্তরিক থাকলে ভোট অবশ্যই অবাধ সুষ্ঠু ও নিরেপেক্ষ করা সম্ভব বলে ইউনিয়নবাসী মনে করছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত গড়াইটুপি ইউপি নির্বাচনের সকল ধরণের প্রচার প্রচারণা রোববার রাত ১২টার দিকে শেষ হয়েছে। রাত পোহালেই মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে ঘিরেই ভোট গ্রহণের আগের দিন থেকে নির্বাচন কমিশন পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনছার সদস্য, স্ট্যাইকিং ফোর্স, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিত থাকবে বলে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কেউ কোনোরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে নির্বাচন আচরণবিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিকুর রহমান বলেন, অবাদ ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের জন্য এরই মধ্যে ৩ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, কিছু উত্তেজনা আছে শুনেছি। সে কারণে পুলিশ, বিজিবি, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছি। অবাদ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের সবকিছু করা হবে। তার লক্ষ্যেই আজ আইন-শৃংখলার মিটিং ডাকা হয়েছে। পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, অবাধ সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠিত হবে এ বিশ্বাস ভোটারদের রাখতে হবে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহম্মেদ বলেন, উদ্বেগ উৎকণ্ঠার বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। আজ প্রার্থী এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময়ের আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং রির্টানিং অফিসার কামরুল হাসান বলেন, ভোট অবাধ সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ হবে। এ নিয়ে ভয় পাবার কিছুই নেই। দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মাহাব্বুর রহমান কাজল বলেন, সাধারণ মানুষ ভোট নিয়ে যেমন প্রত্যাশা করে তেমন ভোটই উপহার দেয়া হবে। কারণ পুলিশ সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে।
এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ জন, সাধারণ (পুরুষ) সদস্য পদে ৪৪ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হিসেবে ৭ জন। চেয়ারম্যান প্রার্থীর তালিকায় আছেন তিতুদহ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আকতার হোসেন (ধানের শীষ), শফিকুর রহমান রাজু মাস্টার (নৌকা), আব্দুল ওয়াহেদ (ঘোড়া-স্বতন্ত্র), রেজাউল করিম (মোটরসাইকেল-স্বতন্ত্র) আব্দুল মতিন (আনারস-স্বতন্ত্র)। মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে আছেন সংরক্ষিত সদস্য পদে ১নং ওয়ার্ডে উম্মে হাসিনা (বক), রওশন আরা বেগম (হেলিকপ্টার) ও নাসিমা খাতুন (মাইক), ২নং ওয়ার্ডে তাসলিমা খাতুন (মাইক) ও মৌসুমী বেগম (বক) এবং ৩নং ওয়ার্ডে শাহিনুর বেগম (বক) ও তাছলিমা খাতুন (মাইক) প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। সাধারণ সদস্য পদে ১নং ওয়ার্ডে পিন্টু মিয়া (মোরগ), মোক্তার হোসেন (তালা), সাঈদ খোকন (ফুটবল), স্বপন আলী (টিউবওয়েল) ও আসাদুল হক (বৈদ্যুতিক পাখা), ২নং ওয়ার্ডে রবিউল ইসলাম (ফুটবল), আব্দুল হক (টিউবওয়েল) ও ইসানুল হক (মোরগ), ৩নং ওয়ার্ডে হাফিজুর রহমান (মোরগ), ছানোয়ার হোসেন (ফুটবল) ও মোমিন মালিতা (টিউবওয়েল), ৪নং ওয়ার্ডে আক্কাছ আলী (মোরগ), শাহাজুল হক (ফুটবল), আব্দুস সাত্তার শেখ (ভ্যানগাড়ি) ও নিতাই চন্দ্র পাল (টিউবওয়েল), ৫নং ওয়ার্ডে মহিদুল ইসলাম (বৈদ্যুতিক পাখা), জহিরুল ইসলাম (টিউবওয়েল), আসাদুল হক, (মোরগ), ফারুক হোসেন চান (তালা) ও মোফাজ্জেল হোসেন (ফুটবল), ৬নং ওয়ার্ডে আব্দুল হালিম (মোরগ), নজরুল ইসলাম (তালা), আসাদুল হক (টিউবওয়েল) ও জিল্লুর রহমান (ফুটবল), ৭নং ওয়ার্ডে মতিয়ার রহমান (ফুটবল), আলমগীর হোসেন (বৈদ্যুতিক পাখা), হাসেম আলী (মোরগ), আলামিন হোসেন (তালা) ও মহিউদ্দিন (টিউবওয়েল), ৮নং ওয়ার্ডে মো. ইসরাফিল (ভ্যানগাড়ি), রাশিদুল ইসলাম (মোরগ), আব্দুল করিম (ফুটবল), মুক্তার হোসেন (তালা), মো. আসাদুল্লাহ (বৈদ্যুতিক পাখা) ও জাকির হোসেন (টিউবওয়েল) এবং ৯নং ওয়ার্ডে ফারুক মিয়া (টিউবওয়েল), আব্দুল কাদের ওরফে আলী কদর (ফুটবল), শাহ আলম (মোরগ) প্রতীক নিয়ে। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ৪৭৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৩০৫ জন এবং মহিলা ভোটার ৮ হাজার ১৬৯ জন। মঙ্গলবার সকাল থেকে গোপন কক্ষে ইভিএমের মাধ্যমে পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন ভোটাররা।