বেগমপুর প্রতিনিধি: মানুষ রাজনীতি করে মানুষের জন্য। তাই রাজনৈতিক জীবন যতটা সম্মানের ঠিক তার উল্টোপিঠও আছে। রাজনীতি আপনাকে যতটা সম্মানিত করবে ঠিক ততটাই অসম্মানিত করার দরজাও খোলা থাকে। তাই কখনো রাজনীতির পিছনে মানুষ ছোটে। আবার কখনো মানুষের পিছনে রাজনীতি ছোটে। সেটা নির্ভর করে পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের সুপার ফাইভের কমিটির মধ্যে সদস্য আছেন আরমাত্র একজন। ৫ জনের মধ্যে তিনজন বহিষ্কার, একজন এক বছর ধরে দেশের বাহিরে প্রবাসজীবন কাটাচ্ছেন। বর্তমানে সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসাবে ইউনিয়নের দায়িত্বে আছেন হাজি খলিলুর রহমান। ইউনিয়ন সুপার ফাইভ ইউনিয়নের রাজনীতির অভিভাবক। তিতুদহ ইউনিয়নে সাময়িক যে রাজনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে তা অচিরেই কেটে যাবে বলে দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে। টিসিবি ও ভিজিএফ’র কার্ডভাগাভাগি নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের বিএনপির দু’গ্রুপের মধ্যে প্রকাশ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সে বিরোধ সহিংসতায় রূপ নেয়। প্রতিপক্ষের হামলায় গত শনিবার ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম টোটন ও তার লোকজন। বিষয়টি বিএনপির হাইকমা- পর্যন্ত পৌঁছায়। তদন্তে এ হত্যাকা-ের সাথে তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের সংশ্লিষ্টতা থাকায় জেলা বিএনপির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম টোটন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেককে স্থায়ী বহিষ্কার করে। হত্যাকা-ের পর বিএনপির রাজনৈতিক শৃঙ্খলা নিয়ে বিভিন্ন মহলে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। তবে দল করে অপরাধ করলে যে তার শাস্তি হয় বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে তার প্রতিফলন ঘটে। বিএনপির হারানো ইমেজ ফিরে আসে। দৃষ্টান্তমূলক এ শাস্তির কারণে বিএনপির নীতিনির্ধারনিদেরকে সাধুবাদ জানায় সচেতন মহল। এদিকে তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার এবং এক বছর আগে সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল গ্রীসে প্রবাস জীবন যাপন করছেন। এর ফলে ইউনিয়ন বিএনপির সুপার ফাইভ থেকে ৪জন ছিটকে পড়েছে। বর্তমানে কমিটির একজন সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসাবে টিকে আছেন হাজি খলিলুর রহমান। এতে করে কিছুটা হলেও ইউনিয়ন বিএনপির রাজনীতিতে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে দলীয়সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির রাজনীতিতে হঠকারিতা বা সন্ত্রাসী কর্মকা- করার কোনো সুযোগ নেই। দলের বৃহত্তর স্বার্থে যে কাউকে ছেটে ফেলেদিতে দল কুণ্ঠাবোধ করবে না। তেমনিটিই ঘটেছে তিতুদহ ইউনিয়নের ক্ষেত্রে। তবে এ সংকট দ্রুতই দলীয়ভাবে সমাধান করা হবে বলে জানাগেছে। রফিক হত্যাকা-ের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষাভাবে দলীয় যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন দল তাদের বিরুদ্ধেও সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। নিহত রফিকের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে গিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেছেন, বিএনপি হত্যার রাজনীতিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় না। রাজনীতি করতে এসে জীবন চলে যাবে এটা কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আর তাকে রাজনীতি বলে না। এদের বিরুদ্ধে শুধু দলীয় শাস্তিই না, দেশের প্রচলিত আইনে অপরাধিদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটাতে আর কেউ যেন সাহস না পায়। এদিকে অপরাধ অনুযায়ী দল যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তাকে সাধুবাদ জানিয়েছে সচেতন মহল। সেই সাথে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলল শাস্তির দাবি তুলেছে এলাকাবাসী।