গাংনীর বিএন কলেজে শিক্ষকদের প্রতিবাদ সভা

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিএন কলেজের অধ্যক্ষ আ ফ ম আলিমুজ্জামানের কাজে বাধা ও ছাত্র-ছাত্রীদের বিভ্রান্তি করার ঘটনায় প্রতিবাদ সভা করেছেন শিক্ষকরা। গতকাল সোমবার দুপুরে কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় কলেজের শিক্ষকরা সাংবাদিকদের সামনে একই কলেজের কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
শিক্ষকদের অভিযোগ, কলেজের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই অধ্যক্ষ হিসেবে আ ফ ম আলিমুজ্জামান দায়িত্ব পালন করে আসছেন। প্রায় ২০ বছর ধরে ননএমপিও থাকা প্রতিষ্ঠানটিতে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে শিক্ষকদের নিয়ে কলেজের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন আলিমুজ্জামান। বেশ কয়েক বছর ফলাফলের ক্ষেত্রে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বড় সাফল্যও অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি। বিনা বেতনে চাকরি করা শিক্ষক কর্মচারীদের অনেকটাই বুকে আগলে রেখে প্রতিষ্ঠানটিকে এমপিও করা ও অন্যান্য বিষয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন আলিমুজ্জামান। এর মধ্যেই গেলো বছর গর্ভনিং বডির সভাপতি তাকে কোনোপ্রকার নোটিশ ছাড়াই দুই দফা সাময়িক বহিস্কার করেন এবং প্রভাষক ইজারুলকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেন।
পরবর্তীতে সভাপতি হন সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক। দায়িত্ব গ্রহণের পর অধ্যক্ষের বহিস্কারের বিষয়ে যাবতীয় নথি পর্যালোচনা করেন নতুন সভাপতি। সেখানে লিপিবদ্ধ অভিযোগগুলো প্রমাণিত না হওয়ায় গেলো ১২ এপ্রিল আলিমুজ্জামানকে স্বপদে বহাল করেন বর্তমান সভাপতি। ফলে নিয়মানুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে যিনি দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি আর অধ্যক্ষ্যের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। শুধুমাত্র পেশিশক্তি বলে ইজারুল ইসলাম এখনও সেই পদ আকড়ে ধরে কয়েকজন শিক্ষক সাথে নিয়ে আলিমুজ্জামানকে কলেজে প্রবেশ বাধা এবং কাজে বাধাগ্রস্ত করছেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা।
অধ্যক্ষ আলিমুজ্জামান জানান, সভাপতি ও অধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড থেকে কলেজের আইডির পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা হয়। ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের জন্য যশোর শিক্ষা বোর্ডের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছাত্রছাত্রীদের ফর্ম পূরণের জন্য অধ্যক্ষ আলিমুজ্জামানকে নির্দেশনা দেন। এর প্রেক্ষিতে ২৯ আগস্ট এলাকায় মাইকিং করে ছাত্রছাত্রীদের ফরম পূরণ করার জন্য কলেজে আসতে বলা হয়। কিন্তু প্রভাষক ইজারুল ইসলামসহ তার পক্ষের কতিপয় শিক্ষক বিদ্যালয়ের চাবি নিয়ে অনড় অবস্থানে রয়েছেন। কলেজের কম্পিউটার কক্ষে প্রবেশে বাধা দেয়ায় ফরম পূরণের কাজ করতে পারছেন না অধ্যক্ষ আলিমুজ্জামান। অপরদিকে অধ্যক্ষের জন্য ফরম পূরণ করা যাচ্ছে না বলে মিথ্যা অভিযোগ তুলে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের একাংশের লোকজন নিয়ে একটি মানববন্ধন করেন ইজারুল ইসলাম। যা নিয়ে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পরিচয় দেয়া প্রভাষক ইজারুল ইসলাম বিভিন্ন দফতরে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে কলেজের কার্যক্রম ধ্বংস করছেন বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষকরা।
কলেজটিকে সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফর্ম পূরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য যথাযথ কর্র্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ আশা করেন প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত শিক্ষক কর্মচারীরা।

 

Comments (0)
Add Comment