গাংনী প্রতিনিধি: গাংনীর রুয়েরকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বদলীর দাবিতে বিদ্যালয়টিতে তালা ঝুলিয়েছেন গ্রামবাসী। সোমবার দিবাগত রাতে এ তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেনি। শিক্ষক বদলী না হওয়া পর্যন্ত অভিভাবকরা তাদের সন্তানদেরকে বিদ্যালয়ে পাঠাবেন না ও তালা খুলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। উপজেলা শিক্ষা অফিস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও বিষয়টি সুরাহা হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, গ্রামের প্রধান শিক্ষক ও দুজন শিক্ষিকা স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরী করছেন। এদের মধ্যে প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষিকা আশুরা খাতুনের পারিবারিক দ্বন্দ্ব দীর্ঘ দিনের। এরই জের ধরে গত বছর ৪ ডিসেম্বর দুই জনের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি গ্রামবাসীরা শিক্ষা অফিসকে জানানোর পর তৎকালীন শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দীন বিদ্যালয়ে গিয়ে স্থানীয়দের ও শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শোনেন এবং দুই শিক্ষককে বদলী করবেন মর্মে অঙ্গীকার করলে পরিস্থিতি স্বাভিাবিক হয়।
এদিকে প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলামকে দুই মাসের জন্য কুঞ্জনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রেশনে প্রেরণ করা হলেও শিক্ষিকা আশুরা খাতুনকে বদলী করা হয়নি। এনিয়েও গ্রামবাসীদের মধ্যে মতবিরোধ চলছিল। গত ৭ এপ্রিল প্রধান শিক্ষকের প্রেশনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আলাউদ্দীন প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলামকে তার পূর্বের কর্মস্থল রুয়েরকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের আদেশ দেন। আবারো শুরু হয় দুই শিক্ষকের মধ্যে দ্বন্দ্ব মনোমলিন্য।
এরই জের ধরে সোমবার রাতে প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম এশার নামাজ শেষে বাড়ি আসার পথে শিক্ষক আশুরা খাতুনের স্বামীসহ আরও ৭-৮ জন তার পথরোধ করে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে আহত আমিরুলকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন। সেই সাথে গ্রামের লোকজন সকল শিক্ষকের বদলীর দাবি তুলে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।
গ্রামের ফজলুল হক, মিনারুল ও গফুরসহ অনেকেই জানান, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও কলহ সৃষ্টি হয়েছে। এতে লেখাপড়া হয় না। বাধ্য হয়ে অনেকেই তাদের সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠান না। বিদ্যালয়টিতে এখন হাতে গোনা কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী আছে। এসব শিক্ষার্থীরাও আর বিদ্যালয়ে আসবে না। তাছাড়া শিক্ষকদের বদলী না হওয়া পর্যন্ত তালা খুলে দেয়া হবে না।
গাংনী উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আলাউদ্দীন জানান, বিদ্যালয়ে তালা ঝোলানোর খবর পেয়ে তিনি বিদ্যালয়ে গেছেন। শিক্ষক ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে তালা খোলার চেষ্টা করছেন। তবে শিক্ষক বদলী না হওয়া পর্যন্ত তালা খুলতে চাচ্ছেন না গ্রামবাসী।