গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরে গাংনী শহরের উত্তরপাড়া থেকে গ্রেফতার দুই সুদকারবারী আবু হানিফ ও আনারুল ইসলামকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল রোববার মেহেরপুর বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে আটকে রাখার আদেশ দেন। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় তাদেরকে উত্তরপাড়া থেকে শাদা স্ট্যাস্প ও সই করা ব্লাঙ্ক চেকসহ গ্রেফতার করে গাংনী থানা পুলিশ।
সুদকারবারের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে পথে বসানোর ঘটনায় গাংনী থানায় আবু হানিফ, আনারুল ইসলাম ও আনিছুর রহমানের নামে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, জনৈক মনিরুল ইসলাম তার ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জিম্মা রেখে সুদকারবারী গাংনী উত্তরপাড়ার হানিফের কাছ থেকে এক লাখ টাকা গ্রহণ করেন। ওই টাকা সুদাসলে দুই লাখ ২০ হাজার টাকা হয়। টাকা পেতে দেরি হওয়ায় হানিফ ওই মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে দেয়। এ ব্যাপারে মনিরুল ইসলাম গাংনী থানায় অভিযোগ করলে শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ হানিফ ও আনারুলের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় সুদকারবারে ব্যবহৃত টালিখাতা, স্ট্যাম্প, চেক ও একটি স্বর্ণের চেইন উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় আবু হানিফ ও আনারুল ইসলামকে। অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যায় অপর সুদকারবারী আনিছুর রহমান। তিনি আবু হানিফের ভাই। গ্রেফতার দুজন ও পলাতক আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে গাংনী থানার এসআই মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে পেনাল কোড-৩৪/৪০৬/৪২০/৪২২/৪২৩/৪২৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং-১৪/২৩ তাং- ১২-০৩-২৩ ইং। এ মামলায় গতকাল রোববার গ্রেফতার আবু হানিফ ও আনারুল ইসলামকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিজ্ঞ আদালতের আদেশে তাদেরকে মেহেরপুর জেলা কারাগারের হাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
অভিযানসূত্রে জানা গেছে, অভিযানে আবু হানিফ ও আনারুলের কাছ থেকে ৩২০টি বিভিন্ন ব্যাংকের ব্লাঙ্ক চেক, ৬৬৯টি নন-জুডিসিয়াল শাদা স্ট্যাম্প, ১৩টি টালিখাতা ও ৫টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। বিপদগ্রস্ত মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে চড়া সুদে তারা টাকা দিতো। যার গ্যারান্টি হিসেবে চেক, স্ট্যাম্প আবার কখনও মোটরসাইকেল কিংবা সোনার গয়না রাখা হতো। তবে দীর্ঘদিন ধরে সুদের টাকা দিয়েও অনেকের টাকা শোধ হয়নি। সুদ টানতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে। সুদকারবারীদের দৌরাত্ম এতোটাই বেড়ে যায় যে, এসব অসহায় মানুষের জমা রাখা চেক ব্যাংকে ডিজঅনার করে আদালতে গিয়ে মামলাও করতো গ্রেফতারকৃত সুদব্যবসায়ীরা। সুদ ব্যবসার মাধ্যমে তারা গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। এলাকায় তারা কুখ্যাত সুদব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।